মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চাপ বহাল রাখুন

—আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সংশ্লিষ্ট দেশের ওপর অব্যাহত চাপ বহাল রাখুন। সরকার মানবাধিকারের কথা চিন্তা করে মিয়ানমার থেকে আগত নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। এটা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মাইলফলক। কিন্তু এটা সাময়িক সমাধান। তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। নইলে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।’ গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন প্রমোটিং ইক্যুয়ালিটি, জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ শীর্ষক এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, সুইজারল্যান্ড মিশনের উপপ্রধান বেইটি কে এলাসার প্রমুখ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সাত লাখ রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। এটা কিন্তু মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক। প্রধানমন্ত্রী এ মানবতা দেখিয়েছেন।’ এ সময় সাংবাদিকরা বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশন গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ১৬৯টি অভিযোগের তদন্ত ও ব্যাখ্যা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠিয়েছে, যা বছরখানেক ধরে আটকে আছে। গত বছর এসব তদন্তের জন্য ওয়াদা করেছিলেন।’ এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এসব অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এসব বিষয়ে আপনাদের ব্রিফ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তা আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করি না। তবে কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে বাড়াবাড়ি করেন, অপরাধ করেন। এজন্য প্রতিটি বাহিনী সব জায়গায় ইন্টারনাল তদন্ত করে। নালিশ আসামাত্র সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌদজারি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মানবাধিকার কমিশন যখনই যে কোনো বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, আমরা সেসব ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়েছি।’ নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘একজন প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দেওয়ার এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তিনি কখন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন, তা তিনি আমাকে বলবেন না। এটা আমিও বলতে পারি না।’

এর আগে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার সবার জন্য সবখানে সমানভাবে’ এটা খুবই ভালো স্লোগান। সংবিধানে সবার অধিকার সমান। কিন্তু গরিব মানুষ অনেক ক্ষেত্রে আইনি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। সরকারের এ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এটি দূর করতে সরকার বিনা খরচে দরিদ্রদের আইনি সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। প্রতি বছর এজন্য বাজেট বাড়ছে। তিনি বলেন, সরকার সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনে বদ্ধপরিকর। এ সময় শেখ হাসিনার সরকার সব সময় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। কিন্তু এর পেছনে কোন শক্তি কাজ করে তা আমরা সবাই জানি। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ছাড়াও এমন কোনো পরিস্থিতি নেই যা করেনি। তাই তারা বাধ্য হয়ে এ দেশে পালিয়ে এসেছে। এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।’

 

সর্বশেষ খবর