বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রেমিকার মাকে খুনের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি আটক

কলকাতা প্রতিনিধি

ভালোবাসার পাত্রীকে বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেছিলেন প্রেমিক, কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন প্রেমিকার মা। আর প্রেমিকার মাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রেমিকের বিরুদ্ধে। খুনের অভিযোগে আটক করা হয়েছে এক বাংলাদেশি যুবককে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হাঁসখালি থানার বগুলায়। পুলিশসূত্রে খবর, শনিবার বিকালে বগুলা শহরের কলেজপাড়ায় নিজের বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে রীনা অধিকারীর (৩৫) লাশ উদ্ধার করা হয়।

এরপর রতন বিশ্বাস (২৬) নামে এক বাংলাদেশি যুবককে আটক করে পুলিশ।

জানা গেছে, কয়েক মাস আগে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন রতন, এরপর বগুলা শহরে বসবাস করছিলেন। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য শনিবার বিকালে নিজের ঘরে রীনাদেবীকে ডেকে পাঠান রতন। আলোচলাকালে রীনার সঙ্গে তর্কাতর্কি বেধে যায় রতনের। একসময় রীনাদেবীর পরনের শাড়ি দিয়েই তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে রতন হত্যা করেন বলে অভিযোগ। রীনার লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য রানাঘাট মহুকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। তদন্তে নেমে সোমবার সকালে খুনের দায়ে রতনকে আটক করা হয়। নিহত রীনা অধিকারীও বাংলাদেশি। এক বছর ধরে স্বামী প্রদীপ অধিকারী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি বগুলার কলেজপাড়ায় বসবাস করছিলেন।

রীনার এক আত্মীয় জানান, দুই বছর আগে বাংলাদেশে থাকাকালেই রীনাদেবীর মেয়ে লাবণীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় রতনের। কিন্তু বছরখানেক আগে বাংলাদেশ ছেড়ে রীনাদেবীর পরিবার ভারতে চলে আসার কারণে সেই সম্পর্ক আর গভীরতা পায়নি। রীনাদেবীও রতনের সঙ্গে মেয়ের বিয়ের বিরোধিতা করেন এবং অন্য জায়গায় মেয়ের বিয়ে দেন। এ ঘটনার পরই রতন ক্ষুব্ধ হন এবং রীনাদেবীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।

শনিবার সন্ধ্যায় রীনাদেবীর বাড়িতে এসে রতন তার উত্তর ভায়না গ্রামের বাসায় যাওয়ার অনুরোধ জানান। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, রীনাদেবীও রতনের আমন্ত্রণে তার বাসায় যাওয়ার জন্য সম্মতি জানান। কারণ মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার পরও রতনের ব্যবহারে অস্বাভাবিক কোনো আচরণ দেখা যায়নি বা ওই পরিবারের সঙ্গে কোনো শত্রুতাও করেননি। ফলে রতন সম্পর্কে কোনো খারাপ ধারণা ছিল না রীনাদেবীর। সেইমতো তিনি রতনের বাসায় চলে যান। আর সেখানেই খুন হতে হয় তাকে।

এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন শনিবার সন্ধ্যায় কলেজপাড়ায় রতনের সঙ্গে রীনাদেবীকে শেষ দেখা যায় এবং এর পরই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। তাদের কথার ওপর ভিত্তি করেই আমরা প্রথমে রতনকে আটক করি। তাকে জেরা করতেই আসল ঘটনা সামনে আসে। নিজেই রীনাদেবীকে খুন করার কথা স্বীকার করেন রতন বিশ্বাস।’

সর্বশেষ খবর