শুক্রবার, ১৮ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

বার কাউন্সিলে পুনর্নির্বাচনের দাবি বিএনপি সমর্থকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছে বিএনপি সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেন ফোরামের মহাসচিব বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

নির্বাচনে ‘নজিরবিহীন দুর্নীতি’র জন্য বার কাউন্সিল নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনার অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে।

পরে একই স্থানে আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক বার কাউন্সিলের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান শ ম রেজাউল করিম বলেন, এ নির্বাচনে ভয়াবহ পরাজয়ের গ্লানি থেকে বাঁচতে আমাদের প্রতিপক্ষ অনাহূতভাবে একটি ধূম্রজাল সৃষ্টি করতে অসত্য ও ভিত্তিহীন কথা বলছে। নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হয়নি।

আইনজীবী ফোরামের অভিযোগ : সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সদস্য ৯ হাজার ৯২ জন। অথচ বার কাউন্সিল নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্ট বারে ভোটার করা হয়েছে মাত্র ৮৫৩ জনকে। বিগত নির্বাচনে শত শত আইনজীবী এ কেন্দ্রে ভোট দিলেও এবারের নির্বাচনে তাদের অনুমতি বা অনুরোধ ছাড়াই ভোটার তালিকা অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। তাই বহু আইনজীবী এ কেন্দ্রে ভোট দিতে পারেননি। সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী বদরুদ্দোজা বাদল, আবেদ রেজা, গোলাম মোস্তফা, রফিকুল হক রাজা, এ কে এম এহসানুর রহমানসহ বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

মাহবুব উদ্দিন খোকন আরও বলেন, বিধান থাকলেও নির্বাচনের দিন প্রার্থীদের এজেন্টকে রেজাল্ট শিট দেওয়া হয়নি। এ নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার তীব্র নিন্দা এবং নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দুর্নীতির তদন্ত করে দায়ী ও জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

অনিয়ম হয়নি : পরে শ ম রেজাউল করিম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এসব অভিযোগ সর্বৈব অসত্য। নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন জুডিশিয়াল অফিসাররা। বিচারকদের বিরুদ্ধে এ-জাতীয় অভিযোগ আনা দুঃখজনক। সবকিছুকে রাজনৈতিকীকরণ যুক্তিসংগত নয়। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হয়নি। বিভিন্ন বার থেকে রেজাল্ট এসে ঢাকায় গণনা হওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলন করায় প্রশ্ন ওঠে, তারা কি আগেই জানতে পেরেছেন হেরে যাবেনই? না হলে রেজাল্ট হওয়ার পরে প্রতিকারের জন্য ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। সেখানে তারা কথা বলতে পারতেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের কোনো ত্রুটি হয়নি। আইনে কোনো ব্যত্যয় হয়নি।

তিনি আরও বলেন, একাধিক আইনজীবী সমিতিতে ভোট দেওয়ার প্রবণতা রোধে একটি সমিতিতে ভোটার করতে কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেজন্য আইনজীবীরা কে কোন বারে ভোট দেবেন নোটিস দিয়ে তা জানতে চাওয়া হয়। অপশন না দিলে তিনি মূল বারে ভোট দেবেন। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে যারা অপশন দিয়েছেন তারা কাঙ্ক্ষিত সমিতিতে রয়েছেন। যারা অপশন দেননি তারা তাদের মূল বারে ভোটার হিসেবে এসেছেন। এ ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি এবং বার ?কাউন্সিলের এটা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত, যে কাউন্সিল সভায় সদস্য হিসেবে মাহবুব উদ্দিন খোকনও ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৪ মে অনুষ্ঠিত বার কাউন্সিলের নির্বাচনে অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে সরকার সমর্থক সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ১৪ আসনের মধ্যে ১২ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা ২টি ?আসনে জয়ী হন।

সর্বশেষ খবর