বুধবার, ২৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিরোধী দলে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য অভিযান

—————————— রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে চলমান মাদক দমন অভিযান প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, বিরোধী দলের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে অপরাধ দমন সম্ভব নয়। বেআইনি মৃত্যুদণ্ড কিংবা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অপরাধ দমনের মানদণ্ড হতে পারে না। এভাবে মানুষ হত্যার অধিকার কারও নেই। রিজভী গতকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, মাদকের গডফাদার ও বড় বড় পুলিশ অফিসারের নাম এসেছে, তাদের কাউকে ধরা হচ্ছে না। অভিযানের নামে কী হচ্ছে তা দেশবাসী অবহিত।

রিজভী আহমেদ বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মাদক নির্মূলের নামে সরকার বিরোধী দলের তরুণ নেতা-কর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করে মেরে ফেলছে। সোমবার রাতে নেত্রকোনায় কথিত ক্রসফায়ারে ছাত্রদল কর্মী আমজাদ হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, সোমবার রাতেও ১০ জনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। রিজভী বলেন, তারা আশঙ্কা করেছেন যে, এই অভিযানের পিছনে সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। সেটা এখন ফুটে উঠতে শুরু করেছে।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, রমজান মাসে খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে জনজীবনে নাভিশ্বাস এবং আইনশৃঙ্খলার করুণ পরিণতিতে দেশের বেহাল অবস্থা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই সরকার ক্রসফায়ারের এ পথ বেছে নিয়েছে কিনা সে প্রশ্নই জনমনে উঁকি দিয়েছে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমরা মাদকবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে নই। অপরাধীদের গ্রেফতার করুন, মাদক সম্রাটদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করুন, আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন। দেশের প্রচলিত আইনেই তো মাদক প্রতিরোধ সম্ভব। কিন্তু তা না করে সারা দেশে বন্দুকের অপব্যবহারে মানুষ হত্যা কোনো সভ্য সমাজের কাম্য হতে পারে না। তিনি বলেন, গত সাড়ে ৯ বছরে মাদকে দেশ ছেয়ে গেছে। গোটা যুব সমাজকে ধ্বংস করতে পরিকল্পিতভাবে মাদকের বিস্তার ঘটানো হয়েছে। এর পিছনে দায়ী ব্যক্তিরা হলেন সরকারদলীয় এমপি বদির মতো রাঘব-বোয়ালরা। যারা মাদক ব্যবসার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের আবার তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করতে দেখা গেছে।

তিনি বলেন, পবিত্র রমজানেও পোশাকে ও সাদাপোশাকে পুলিশ তল্লাশির নামে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানি চলছে। কোথাও না কোথাও বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি, গ্রেফতার কিংবা জেলগেটে গ্রেফতার চলছেই। সোমবার রাতে সাহরির কিছুক্ষণ আগে নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর রাজধানীর বনানীর সিলেট হাউসের বাসায় ডিবি পরিচয়ে পুলিশের তল্লাশির নামে তাণ্ডব চালায়। জোরে জোরে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ইলয়াস আলীর অসুস্থ স্ত্রীকে দরজা খোলার জন্য বলে। আতঙ্কিত হয়ে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা আমাকেসহ বিএনপির নেতাদেরকে ফোনে আকুতি জানাতে থাকেন। পরে গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে ইলিয়াস আলীর বাসার সামনে অবস্থান নেওয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা চলে যায়। বিরোধী দলের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির জন্যই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সাদা পোশাকধারী সরকারি বাহিনীর কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী আহমেদ।

সর্বশেষ খবর