বুধবার, ৬ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ওমরাহ পালনের নামে দেশ ছাড়ছে মাদকের হোতারা : বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের গণতন্ত্র এখন সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, অর্থনীতিও যথেষ্ট শক্তিশালী। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে শ্রেষ্ঠ তামাশা। তিনি দেশি-বিদেশি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিলে চরমপন্থার উদ্ভব হয়। এটা দেশে দেশে প্রমাণিত। বিষয়টি সবার মনে রাখতে হবে। আমাদের গণতন্ত্র এখন ক্রসফায়ারতন্ত্রে বন্দী। মাদক নির্মূলের নামে সাধারণ মানুষকে ক্রসফায়ার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মাদকের হোতারা অবলীলায় দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। আর বলছে ওমরাহ করতে যাচ্ছি। আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, গণবিরোধী সরকারের কাছ থেকে কেউ ভালো ও জনকল্যাণমুখী বাজেটের প্রত্যাশা করতে পারে না। তার পরও আমরা বাজেট না দেখে কিছু বলতে পারব না।

 আগে বাজেট পেশ হোক তারপর প্রতিক্রিয়া দেওয়া যাবে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু, বেলাল আহমেদ, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, ওলামা দল সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুল মালেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বেগম জিয়ার মুক্তি সম্পর্কে রিজভী বলেন, জনগণের কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, দেশ এখন পেছনের দিকে যাচ্ছে। সারা দেশে সড়ক-মহাসড়ক ছোট ছোট খালে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন শুধু সাইনবোর্ড আর বিলবোর্ডেই শোভা পায়। দেশে সড়ক-মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়ক মিলে ৮৫ হাজার কিলোমিটার সড়কে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। সড়কের খানাখন্দ আর দুর্ভোগের আশঙ্কায় লাখ লাখ মানুষ ঈদে বাড়ি যেতে পারবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ আবারও একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন ও ভোট ডাকাতির নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। সেজন্যই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় আটকে রেখেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সে ইচ্ছা পূরণ হবে না। মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে বদ্ধপরিকর।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ভারত থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা ভারতকে যা দিয়েছি তা ভারত সারা জীবন মনে রাখবে। আমরা কিন্তু তাদের শান্তি ফিরিয়ে দিয়েছি, আমরা কোনো প্রতিদান চাই না। রিজভী বলেন, জনগণের জানার অধিকার আছে যে ভারতের কাছে কী প্রতিদান চাওয়া হয়েছে, তাদের কাছ থেকে কী আশ্বাস পাওয়া গেছে। বছরখানেক আগেও প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়েছিলেন, তখন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিসরে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতার অনেক চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির একগুঁয়েমির অজুহাত দেখিয়ে তিস্তার পানির কোনো প্রাপ্তিই ঘটেনি।

দলের সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব বলেন, ভারতকে আজ উপলব্ধি করতে হবে তারা যদি এ দেশের জনগণের মতামত উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের পক্ষে অনধিকার হস্তক্ষেপ করে, তাতে জনগণের মনে ভারতের গণতান্ত্রিক ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্নই হবে।

সর্বশেষ খবর