সোমবার, ২৫ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রেমে বাধা হয়নি সীমান্তের তারকাঁটা

কলকাতা প্রতিনিধি

কথায় আছে ভালোবাসা সীমানা মানে না। আর সেই ভালোবাসার টানেই দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আসে সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার এক নাবালিকা। ঘাস কাটার নাম করে তারকাঁটার বেড়া টপকে বাংলাদেশের প্রেমিকের কাছে আসে সে। অবশেষে ছয় দিন পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সহায়তায় বাংলাদেশ থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে মালদার তপন থানা পুলিশ। এরপরই ওই ভারতীয় কিশোরীকে তুলে দেওয়া হয় তার পরিবারের হাতে। যদিও ওই কিশোরী জানাতে ভোলেনি যে নিজের ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত সে অপেক্ষা করবে এবং এরপরই ফের সীমান্ত পেরিয়ে তার ভালোবাসার বাংলাদেশি পাত্রকে বিয়ে করবে।

পুলিশ সূত্রে খবর, তপন থানার অধীন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গোপালনগর এলাকার ১৪ বছর বয়সী শরিফা খাতুন (নাম পরিবর্তিত)। স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তারকাঁটার ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে জমি থাকার সুবাদে চাষাবাদ ও ঘাস কাঁটার জন্য ছোট বেলা থেকেই বাবার হাত ধরে সেখানে যেত শরিফা। ওপারে যাতায়াতের সুবাদেই মাস কয়েক আগে বাংলাদেশের নওগাঁর আইহাই গ্রামের বাসিন্দা করিম বাবু নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় শরিফার। ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। এ অবস্থায় প্রেমিকার টানে তারকাঁটার ফাঁক গলে বাংলাদেশি যুবক বেশ কয়েকবার ভারতে গিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করে। এরই মধ্যে চলতি মাসের গোড়ার দিকে শরিফাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় করিম। আর সেই আবেগে গা ভাসিয়ে গত ১৭ জুন ঘাস কাটার নাম করে সীমান্ত পেরিয়ে নিজের জমিতে যায় শরিফা। সেখান থেকে প্রেমের টানে করিমের নওগাঁর বাড়ি চলে যায় এবং সেখানেই থাকতে শুরু করে।

এদিকে বিকালে মেয়ে বাড়িতে না ফেরায় ১৮ জুন তপন থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে শরিফার পরিবার। এরপরই তপন থানার পুলিশ পুরো বিষয়টি জানায় বিএসএফকে। এরপর বিএসএফের তরফে ওই ভারতীয় কিশোরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয় বিজিবিকে। পরে দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহায়তা গত শুক্রবার (২২ জুন) শরিফাকে উদ্ধার করে তপন থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

তপন থানার অফিসার-ইনচার্জ (ওসি) সৎকার সাংবো জানান ‘সীমান্ত পেরিয়ে ওই ভারতীয় কিশোরীর বাংলাদেশে চলে যাওয়ার খবর পাওয়ার পরই বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর তারা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই কিশোরীর সন্ধানে অভিযান চালায়। শেষে করিমের বাড়িতে ওই তরুণীর খোঁজ মেলে। এরপর তাকে উদ্ধার করে বিএসএফ’র সহায়তায় তার পরিবারের তাতে তুলে দেওয়া হয়’।

এদিকে মেয়েকে ফিরে পাওয়ায় খুশি শরিফার বাবা-মা। কিন্তু শরিফা জানিয়েছে, করিমের সঙ্গে তার এই বিচ্ছেদ সাময়িক। সে জানায় ‘আমি করিমকেই বিয়ে করব, অন্য কাউকে নয়। আমার বয়স যখন ১৮ বছর হবে, আমি সীমান্ত পেরিয়ে করিমের কাছে চলে যাব। তখন আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না’।

সর্বশেষ খবর