বৃহস্পতিবার, ২ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

পরিস্থিতি সামলাতে সরকার ব্যর্থ : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পদত্যাগ, নিরাপদ সড়ক ও ঘাতক বাসচালকের শাস্তি প্রদানসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে ‘পরিবহন সেক্টরের বিশৃঙ্খলার উসকানিদাতা’ আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্ভূত সংকট সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

রবিবার রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে গতকালও ঢাকার রাজপথে নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। এতে রাজধানীর যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

বিবৃতিতে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর যখন সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ বেদনার্ত, শোকাহত ও ক্ষুব্ধ, তখন ছাত্রছাত্রীর লাশ নিয়ে নৌমন্ত্রীর হাসি যেন পুরো দেশবাসীর প্রতি বিদ্রূপের হাসি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান পরিবহন সেক্টরের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সুতরাং তার আশকারায় দীর্ঘদিন ধরে এই সেক্টরে অরাজকতা লেগেই আছে। কিছু প্রশিক্ষণহীন অদক্ষ চালক ও লাইসেন্সবিহীন সমবয়সী চালক এবং চলাচলে অনুপযোগী যানবাহনের প্রাধান্য থাকলে সড়ক-মহাসড়কে মরণঘাতী ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তেই থাকবে। আর এগুলো প্রাধান্য পাচ্ছে শুধু নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের প্রশ্রয়ে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান সরকার সব ক্ষেত্রে সীমাহীন ব্যর্থতায় পর্যবসিত। সরকারের প্রশ্রয়ে দুষ্কৃতকারীদের দাপট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এ দেশে এখন মানুষের জীবন-জীবিকা চরমভাবে নিরাপত্তাহীন। মানুষের ক্ষোভের আঁচ উপলব্ধি করতে পারে না বলেই সরকার গণবিরোধী বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। কোমলমতি কিশোর-কিশোরী ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন ঝরে পড়াটাও এই দুঃশাসনেরই ফল।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দুই শিক্ষার্থীর হৃদয়বিদারক মৃত্যুতে দেশজুড়ে মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়লেও তাতে সরকারের বিন্দুমাত্র টনক নড়েনি। বরং বেপরোয়া বাসচালকের দ্বারা এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের লক্ষ্য করে গুলি, টিয়ার গ্যাস ও বেধড়ক লাঠিচার্জে যেভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, তা কেবল নিষ্ঠুর স্বৈরশাসকদের দ্বারাই সম্ভব। ন্যায়বিচার না পাওয়া, বঞ্চিত, প্রতিবাদী ছাত্র-ছাত্রীদের হিংস্র আক্রমণে আহত করার পর অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। গতকাল যাত্রাবাড়ী ও দনিয়া এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরাও তাদের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালিয়েছে। মির্জা ফখরুল শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারের এই অমানবিক আক্রমণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করে বলেন, সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতার জন্যই সব ক্ষেত্রে অধঃপতন শুরু হয়ে গেছে। বর্তমানে সড়ক-মহাসড়কে প্রতিদিন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিবৃতিতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ী চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিসহ নিহতের ঘটনায় তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি নিহত দুই শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

সর্বশেষ খবর