শুক্রবার, ১০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
কর্মশালায় বক্তারা

আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে কাজের সুযোগ ও দক্ষতা বাড়াতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল’ বিষয়ক এক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, ব্যাংক হিসাব থাকা মানেই আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নয়, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি তখনই সফল হবে-যখন সব মানুষ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ পাবে। সেটা হতে পারে কর্মসংস্থান, সেবা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে। এজন্য দরকার কাজের সুযোগ সৃষ্টি ও দক্ষতা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে রাজধানীর একটি হোটেলে এ কর্মশালার আয়োজন করে। এতে সহযোগিতা করে বিজনেস ফাইন্যান্স ফর দ্য পুওর ইন বাংলাদেশ ও ডিএফআইডি। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি জানান, কিছু ক্লান্তি তাকে ভর করেছে। এজন্য নতুন করে এনার্জি পেতে আগামী ১০ দিন তিনি ছুটিতে থাকবেন। যা গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আর একটি মাত্র কর্মসূচিতে তিনি অংশ নেবেন। কর্মশালার বিষয়বস্তুর ওপর আলোকপাত করে মুহিত বলেন, সরকার ২০০৯ সাল থেকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। এজন্য ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে জনসংখ্যার তুলনায় ব্যাংকের শাখা কম। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১০ হাজার ব্যাংক শাখা যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানো দরকার। অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য আছে, দরিদ্রতা মোকাবিলায় রাজনৈতিক শক্তি কাজ করে যাচ্ছে। সরকার লক্ষ্যগুলো অর্জনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে সবার অর্থায়নের ক্ষেত্রে কিছু বাধা রয়েছে, তা দূর করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, দেশ এগোচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন নিয়ে কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হচ্ছে। এখন আমাদের দক্ষ লোক দরকার।

কর্মশালায় মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক আসিফ ইকবাল। অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনা পর্ব পরিচালনা করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য অঞ্চলভিত্তিক কর্মকৌশল নেওয়ার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর চৌধুরী বলেন, মানুষ যাতে দক্ষতা ও শ্রমের বিনিময় করার সুযোগ পায়- সে রকম বাজার তৈরি করতে পারাই আর্থিক অন্তর্ভুক্তি। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, গ্রামাঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে বিনিয়োগ খুবই কম। কোনো মফস্বল ব্যাংক শাখা বছরে ২৫ কোটি টাকা আমানত পেলে সেখানে ঋণ বিতরণ হয় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা, তাও কর্মীদের ঋণ বেশি। অপ্রচলিত খাতকে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নীতিমালা গবেষণা কর্মকাণ্ডের প্রধান পরামর্শক মোস্তফা কে মুজেরি, ডিএফআইডির কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জেন এডমন্ডসন, বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জুলহাস উদ্দিন, বিকাশের সিইও কামাল কাদির, শিওর ক্যাশের সিইও শাহাদাৎ খান প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর