রবিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

দেশের প্রথম শিশুবান্ধব আদালতের উদ্বোধন আজ

আরাফাত মুন্না

সাধারণ আদালতের মতো লালসালু মোড়ানো এজলাস থাকবে না। থাকবে না কোনো ডক ও কাঠগড়া। বিচারকার্য চলাকালে উকিল ও বিচারকের গায়ে থাকবে না গাউন (বিশেষ ধরনের পোশাক), কালো কোট। পুলিশ বা আদালতের কোনো কর্মচারীও পেশাগত বা দাফতরিক কোনো পোশাক পরতে পারবে না। আদালত কক্ষের পরিবেশ হবে ঘরোয়া ও পারিবারিক। বিচারের আওতায় আনা শিশুদের জন্য শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী এমন ব্যতিক্রমভাবে সাজানো হচ্ছে শিশু আদালতের এজলাস। ঢাকা মহানগর আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্থাপিত দেশের প্রথম এই শিশুবান্ধব আদালতটি আজ উদ্বোধন করবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। আইন অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে দেশের ৬৪ জেলায় এ ধরনের শিশুবান্ধব আদালত স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শিশুবান্ধব এসব আদালতে এজলাসের পাশেই থাকবে একটি অপেক্ষা কক্ষ। এ ছাড়া থাকবে একজন প্রবেশন কর্মকর্তার কক্ষ। এই কক্ষ সাজানো হয়েছে বিভিন্ন চিত্রকর্ম দিয়ে। অভিযুক্ত বা বিচারপ্রার্থী শিশুরা সার্বক্ষণিক প্রবেশন কর্মকর্তার সান্নিধ্য ও সহায়তা পাবে। বিচারকাজ শুরুর আগে শিশু তার মাতা-পিতা বা অন্য অভিভাবকের সান্নিধ্যে অপেক্ষা করতে পারবে। ফলে অন্য আদালতে আনীত বয়স্ক অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে এসব শিশুর সংমিশ্রণের সুযোগ থাকবে না। আশা করা হচ্ছে, এর ফলে শিশুদের মধ্যে বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কোনো ধরনের ভীতি থাকবে না। জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার মো. সাইফুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে উচ্চ আদালতের দেওয়া একাধিক রায়ে ২০১৩ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। ওই আইনেই প্রতি জেলার শিশুবান্ধব আদালত কক্ষ স্থাপনের কথা রয়েছে। তিনি বলেন, রবিবার ঢাকায়ই প্রথম শিশুবান্ধব আদালত কক্ষটি উদ্বোধন করবেন প্রধান বিচারপতি। এখন থেকে ঢাকার বিভিন্ন আদালতে থাকা শিশুদের মামলা এই আদালতে ট্রান্সফার করা হবে। শিশুদের সব ধরনের বিচার শিশুবান্ধব এই আদালতেই হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ১৪টি শিশুবান্ধব আদালত কক্ষের কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান তিনি। শিশুবান্ধব আদালত তৈরির জন্য গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি শিশু অধিকার বিষয়ক সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কমিটি এবং ইউনিসেফের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। শিশু অধিকার বিষয়ক সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের কমিটি ও ইউনিসেফের কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর