রবিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
বিএনপির স্থায়ী কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

এজেন্ডাহীন সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির দীর্ঘ বৈঠকে সরকারের সঙ্গে সংলাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে শর্তহীন যে সংলাপের কথা বলা হচ্ছে, তা নিয়েও বিশ্লেষণ করেন নেতারা। তবে এজেন্ডাহীন সংলাপ ফলপ্রসূ হয় না বলেও বৈঠকে আলোচনা হয়। দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু ভোট হবে না বলেও মনে করেন দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্যরা। গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক মুলতবি করা হয়। আজ আবারও স্থায়ী কমিটির নেতারা বৈঠক বসবেন। এরপর ২০-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি। জোট নেতাদের মতামত ফের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হবে। বৈঠকে জাতীয় ঐক্য, সাংগঠনিক অবস্থা, আন্দোলনের রূপরেখাসহ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়েও আলোচনা করে স্থায়ী কমিটি। বৈঠকে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান।

বৈঠকসূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপের আহ্বান জানানো হলে আলোচনার বিষয়বস্তু কী হবে তা নিয়েও নিজেদের মতামত দিয়েছেন নেতারা। এ ধরনের সংলাপ হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার দাবির বিষয়ে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া কূটনৈতিক পর্যায় থেকে রাষ্ট্রপতির অধীনে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থায় বিএনপির মত জানতে চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়টিকেও তারা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় নিয়ে আসেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া এক নেতা বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, আন্দোলনের কৌশল, সরকার যদি সংলাপে ডাকে সেখানে অংশগ্রহণ করা বা না করা এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি বিষয়ে করণীয় নিয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতাদের মতামত নেওয়া হয়েছে। এসব মতামতের ওপর পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক হয়েছে। বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচনা হয়েছে জাতীয় ঐক্যের খসড়া নিয়ে। আরেক নেতা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে আন্দোলন সফল করতে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি শক্তিশালীকরণে বৈঠকে জোর দেওয়া হয়েছে। বৈঠকসূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন নেতারা। দলকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করে ঈদের পর থেকে ধীর প্রক্রিয়ায় রাজপথের কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় ঐক্যের প্রক্রিয়ায় আরও রাজনৈতিক দলকে অন্তর্ভুক্তির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকটি শেষ হয়নি, মুলতবি করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর