চূড়ান্ত আন্দোলনের আগ পর্যন্ত বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, আগামী দিনের আন্দোলনে সবাইকে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে হবে। তার আগ পর্যন্ত সবাইকে গ্রেফতার এড়িয়ে চলতে হবে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাঁর চিকিৎসার দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ পরামর্শ দেন।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মামুন-উর রশীদ শান্তর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সহসভাপতি নাজমুল হাসান, জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, একজন একটা মেসেজ পাঠিয়েছেন। আপনাদের অনেকের কাছেও পাঠিয়েছেন, আপাতত ধরা-টরা পড়বেন না, সাবধানে থাকবেন। আন্দোলন-সংগ্রাম সামনে আসছে, তখন যেন সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারেন, একই আহ্বান আপনাদের প্রতি আমারও। তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। ১০ বছরে রাজনৈতিক দূষণে যে পরিমাণ মানুষ বাংলাদেশে মারা গেছে, তার পরিসংখ্যান করা হলে সমগ্র বিশ্বের মধ্যে এক নম্বর হবে এ দেশ। বিএনপির এই নেতা বলেন, সবাই আগামী নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলছেন। কিন্তু সরকারের এমপিরা স্বপদে বহাল থেকে নির্বাচন করবেন, আর আমরা এমপি না হয়ে ইলেকশন করব, এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলো নাকি? কাজেই নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্দলীয় সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সেনা মোতায়েন করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষ যখন ঐক্যবদ্ধ হয়, তখন কোনো বাধাই তাকে আটকাতে পারে না। এ দেশের মানুষ যেভাবে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত, অত্যাচারিত ও বঞ্চিত হয়েছে, তাতে সবার মধ্যে একটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মনে রাখতে হবে, বিপুল পরিমাণের একটা বারুদের স্তূপ যদি এক জায়গায় রাখে, সেটা কোনো ক্ষতি করতে পারে না, যে পর্যন্ত তাতে আগুনের স্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করা না হয়। বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর হৃদয়ে এখন বারুদের স্তূপ জমে আছে। সেগুলো বিস্ফোরণের অপেক্ষায় আছে। কখন, কীভাবে সে বিস্ফোরণ ঘটবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। এটা মনে করার কারণ নেই যে, বিএনপি দুর্বল হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা বাকশালে বিশ্বাস করি না যে, আর কাউকে রাজনীতি করতে দেব না। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরাও রাজনীতি করব, আপনিও করবেন। জনগণের কাছে আমরা যাব, আপনিও যাবেন। কিন্তু আপনি আমাদের রাজনীতিই করতে দিতে রাজি নয়। আমাদের নেত্রীকে জেলে রাখবেন, নেতাকে বিদেশে থাকতে বাধ্য করবেন এবং মিটিংয়ের অনুমতি দেবেন প্রেস ক্লাবে যেন পুলিশ দিয়ে নেতা-কর্মীদের আসা-যাওয়ার পথে গ্রেফতার করতে পারেন। এটা বন্ধ করুন। এর পরিণতি ভালো হবে না।
.jpg?v=1713538290)
