মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদন করতে চান বাংলাদেশি বিজ্ঞানী দম্পতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদন হবে। রাজধানীতে প্রতিদিন যে পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয় তা সংগ্রহ করে তেল উৎপাদন করা সম্ভব। এসব বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদন প্রতি লিটারে খরচ হবে মাত্র ২০ টাকা। সরকারের সহায়তা পেলে বাংলাদেশে প্লান্ট স্থাপন করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি বিজ্ঞানী দম্পতি ড. মইন উদ্দিন সরকার ও ড. আনজুমান শেলী। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ আগ্রহের কথা জানান।

ড. মইন উদ্দিন বলেন, বর্জ্য পুনরায় প্রক্রিয়াজাতকরণ করে জ্বালানি তেল উৎপাদন করা হবে। বর্জ্য থেকে জ্বালানি তেল, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলপিজি) ও জেট ফুয়েল তৈরি করতে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে একটি প্লান্ট স্থাপন করেছি। এর মাধ্যমে প্রতি টন প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য থেকে এক হাজার ৩০০ লিটার জ্বালানি তেল, ১০ সিলিন্ডার এলপি গ্যাস ও ২৩ লিটার জেট ফুয়েল তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, ওয়াস্ট টেকনোলজিস এলএলসি কোম্পানি এই প্লান্টের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ করছে। বর্তমানে বর্জ্যকে পরিবেশবান্ধব করে তুলতে এ নিয়ে কাজ করার আগ্রহের কথা জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্লাস্টিক পচনশীল না হওয়ায় এর বর্জ্য মানুষ ও সমাজের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৫০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রায় ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ সম্ভব।

ড. মইন উদ্দিন বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে ঢাকা হবে দক্ষিণ এশিয়ার মডেল। দক্ষ লোকবল তৈরি করতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ফলে বিদেশি কোনো জনবল নিয়োগ করতে হবে না। দেশের লোকজনই এই প্লান্ট চালাবে। এতে কর্মসংস্থানও তৈরি হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি প্লান্ট স্থাপন করতে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এটিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। এই বিজ্ঞানী দম্পতি জানান, দেশের কয়েকটি সিটি করপোরেশনও আমাদের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। এজন্য বাস্তবে প্লান্ট দেখতে যুক্তরাষ্ট্রও পরিদর্শন করবেন তারা। 

বিগত ২৮ বছর ধরে বিভিন্ন দেশে গবেষণার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ড. মইন। ২০০৫ সাল থেকে বিজ্ঞানী দম্পতি প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ২০১০ সালে প্লাস্টিক তেল উৎপাদনের কৌশল উদ্ভাবন ও পেটেন্ট করেন।

সর্বশেষ খবর