শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
লালদীঘির ২৪ হত্যা

বিচার শেষ না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর আক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার বিচার ৩০ বছরেও শেষ না হওয়ায় আক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ১৭টি প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন। এই ১৭টি প্রকল্পের মধ্যে ‘১৯৮৮ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত ২৪ জন নেতা-কর্মীসহ গণতন্ত্রকামী বীর শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ’ ছিল একটি। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই মামলা এখনো শেষ হলো না, সেটা আমার দুঃখ।’ এরপর চট্টগ্রামে সমবেতদের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারির সেই ঘটনার স্মৃতিচারণা করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী আবারও বিষয়টির অবতারণা করে বলেন, ‘আপনি সেদিনের স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন। সেদিন সরাসরি গুলি ও লাঠিচার্জ করা হয়েছিল। এখনো মামলাটি শেষ হয়নি। মামলাটি যিনি করেছিলেন তিনিও এখন বেঁচে নেই। আপনি একজন আইনজীবী, আপনারা উদ্যোগ নেন মামলাটা যেন দ্রুত শেষ হয়।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে পুলিশ কর্মকর্তা সেদিন গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং খালেদা জিয়ার সময়ে তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল।’ ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বন্দরনগরের লালদীঘি ময়দানে এক জনসভায় যাওয়ার পথে তাঁর গাড়িবহরে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ।

 ওই ঘটনায় সেদিন ২৪ জন নিহত হন। তার মধ্যে দুজনের পরিবারের সদস্য মনজু ও অঞ্জন উপস্থিত ছিলেন ভিডিও কনফারেন্সে। ওই হত্যাকাণ্ডের চার বছর পর ১৯৯২ সালে আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা একটি মামলা করলেও বিএনপি আমলে তদন্ত আর গতি পায়নি।

পরে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে ১৯৯৮ সালে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া অভিযোগপত্রে আটজনকে আসামি করা হয়। তাতে প্রধান আসামি হন ঘটনার সময় চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা। গত তিন দশকে মামলার গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন সাক্ষী, দুই আসামি রকিবুল হুদা ও পুলিশ কনস্টেবল বশির উদ্দিন, মামলার বাদী আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা এবং সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আবদুল কাদের মারা গেছেন।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, বন্দর চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আজিজ, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) আমেনা বেগম, চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার ও প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর