রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফ্লাইওভার হলেই টাকা

——— আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, ফ্লাইওভার শহরের জন্য একটি অভিশাপ। এ দেশে ফ্লাইওভার বানানো হচ্ছে কিছু লোকের লাভের জন্য। কারণ ফ্লাইওভার হলেই টাকা। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর রজতজয়ন্তী উপলক্ষে ‘নিসচার ২৫ বছর : প্রেক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব বলেন তিনি।

 অনুষ্ঠানে ‘নিসচা রজতজয়ন্তী পুরস্কার’ পান প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান। এ ছাড়াও সম্মাননা তুলে দেওয়া হয় স্বেচ্ছাসেবক আজহার মণ্ডল এবং মৌলভীবাজার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. সালাউদ্দিন কাজলকে। এতে সভাপতিত্ব করেন নিসচার চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সড়ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক, অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বিএফইউজের সহসভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, মহাসচিব শাবান মাহমুদ ও হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম। 

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, দেশে একের পর এক ফ্লাইওভার হচ্ছে। ফ্লাইওভার যত বড়, তার নিচে ততটুকু রাস্তা অব্যবহূত হয়ে আসছে। তাহলে উপরের রাস্তাটি দরকার কেন, আমরা যদি রিকশা এবং ফুটপাথের দোকানগুলোকে কন্ট্রোল করতে পারতাম, তাহলে এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট হতো না।

তিনি বলেন, বাস ও ট্রাকের জন্য দেশে ট্রেন ডেভেলপ হয়নি। সারা পৃথিবীতে ট্রেন চলে। আমাদের সেই ট্রেনকে বন্ধ করে দিয়ে তারা বাস কিনতে লাগল, রিকশা কিনতে লাগল, ট্রাক কিনতে লাগল। এতদিন পরে আবার এসে ট্রেনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি ট্রেনের ওপর গুরুত্ব আরও বাড়লে দুর্ঘটনার হার অর্ধেক কমে যাবে। আমাদের এখানে যে সমস্যাগুলো আছে তার মধ্যে অন্যতম রাস্তা যথেষ্ট চওড়া না থাকা। দুই লেনের হাইওতে কোনো একটা গাড়ি যদি বিকল হয়ে যায় তাহলে তিন মাইল পর্যন্ত গাড়ির লাইন হয়ে যায়। সুতরাং হাইওয়ে চার লেন হতেই হবে।

আলোচনা সভায় গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরা হয়। ২০১৫-১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনার হার নিম্নগামী থাকলেও ২০১৭ সালে তা বেড়ে যায়। এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ১৩৩টি। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার সবচেয়ে বেশি শিকার হয় পথচারীরা। এসব তথ্য উপস্থাপন শেষে আলোচনা সভার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিসচার মহাসচিব এহসানুল হক। 

আলোচনায় নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও আমরা আমাদের অভ্যাসে পরিবর্তন করতে পারিনি। আমাদের অন্য দিকগুলোর উন্নয়ন করতে পারলেও আমরা আমাদের মানসিক দিকটির উন্নয়ন করতে পারিনি। আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্যগুলো নিজের মনের মধ্যে নিয়ে করতে পারি তবে আমি মনে করি, সড়ক দুর্ঘটনা থামাতে পারব। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর