নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র ইছাহাক হোসেন (৭০) খুনের ঘটনায় কাউন্সিলরসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন হন ইছাহাক হোসেন। এ ঘটনায় গতকাল বিকাল পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। পুলিশ জানায়, ইছাহাক হোসেন খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ ওরফে লেটু ফকির (৪৫) ও তার বড় ভাই লোকমান হোসেনকে (৪৮) আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতেই তাদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত ইছাহাক হোসেনের বাড়ির কেয়ারটেকার আনিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। পত্নীতলা থানার ওসি পরিমাল চক্রবর্তী জানান, ইছাহাক হোসেনের খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহভাজন হিসেবে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া খুনিরা ইছাহাক হোসেনের বাড়ির কেয়ারটেকার আনিকুলকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে রেখেছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নওগাঁ সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নির্বাচনী সভা শেষে রাত পৌনে ১০টার দিকে ইছাহাক হোসেন ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাড়ির পথে রওনা হন। তার গাড়িটি নজিপুর পৌরসভার মাহমুদপুর এলাকায় বাসার সামনে এসে পৌঁছলে গ্যারেজের গেট খুলে দেওয়ার জন্য চালক বার বার হর্ন বাজান। কেয়ারটেকার কোনো সাড়া না দেওয়ায় ইছাহাক হোসেন গাড়ি থেকে নামেন। এ সময় ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় গাড়ি চালক আসলাম হোসেন তাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাকেও ছুরিকাঘাত করে। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা দ্রুত আহত দুজনকে উদ্ধার করে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে ইছাহাকের মৃত্যু হয়। গাড়িচালক আসলাম পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গতকাল বিকালে নজিপুর পৌরসভার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় স্থানীয় এমপি শহিদুজ্জামান সরকারসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশ নেয়।
