মঙ্গলবার, ৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধর্ষণের পর শিশুকে তিনতলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা

বিক্ষুব্ধ মানুষের থানা ঘেরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন এলাকায় দুই বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর তিনতলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গতকাল এর প্রতিবাদে এবং আসামিকে গ্রেফতারের দাবিতে গেন্ডারিয়া থানা ঘেরাও করেন।

জানা গেছে, দীননাথ সেন রোডের ৫৩/১/ছ নম্বর চারতলা বাড়ির পাশে টিনশেড বস্তিতে মা-বাবা ও তিন বোনের সঙ্গে থাকত শিশু আয়েশা। প্রতিদিন সকালে আয়েশার মা-বাবা কাজে যেতেন। এ সময় গেন্ডারিয়ার সাধনা ঔষধালয়ের সামনের গলিতে খেলে বেড়াত শিশুটি। অন্য দিনের মতো গত শনিবারও বিকালে খেলতে বের হয় আয়েশা। সন্ধ্যার দিকে টিনশেড বস্তির পাশের চারতলা বাড়ির সামনে আয়েশার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।

আয়েশার পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। চারতলা বাড়ির চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া নাহিদ (৪৫) শিশুটিকে ধর্ষণ করে। পরে ভবনের তিনতলা থেকে আয়েশাকে নিচে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। রবিবার শিশুর বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে গেন্ডারিয়া থানায় একটি মামলা করেন। গতকাল দুপুরে দীননাথ সেন রোডের বাসিন্দারা আসামিকে গ্রেফতারের দাবিতে গেন্ডারিয়া থানা ঘেরাও করেন।

থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব আলম বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনার পর আয়েশাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণার পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের পর গতকাল জুরাইন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। উদ্ধারের সময় আয়েশার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে আয়েশার শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। ধর্ষণ হয়েছে কিনা- তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, মামলার বাদী ও এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিকালে ওই বাড়ি থেকে নাহিদকে গ্রেফতার করা হয়।

নাহিদ পুরান ঢাকার ইসলামপুরে ব্যবসা করতেন। তবে বর্তমানে তিনি ব্যবসা করেন না। দীননাথ সেন রোডে নিজের চারতলা বাড়ির ভাড়ার টাকায় তার সংসার চলে। নাহিদ উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির মানুষ। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি ফের বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী নাহিদের সংসার ছেড়ে চলে গেছেন। তাকে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়।

আয়েশার মামা মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করেন, আয়েশাকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছেন চারতলা বাড়ির মালিক নাহিদ। তিনি ভবনের তিনতলায় থাকেন। আয়েশা বিকালে যখন খেলছিল, তখন তাকে খিচুড়ি খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান নাহিদ। সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয়। সন্ধ্যার দিকে ফ্ল্যাটের খোলা বারান্দা থেকে আয়েশাকে নিচে ফেলে দেন নাহিদ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর