শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সান্ধ্য কোর্সে ‘সাত খুন মাফ’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে

মর্তুজা নুর, রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নিয়মিত কোর্সের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নিয়মমাফিক শাস্তি অব্যাহত থাকলেও সান্ধ্যকোর্সে তা হচ্ছে না। নিয়মিত কোর্সের তুলনায় সান্ধ্যকোর্সের পরীক্ষায় অনিয়ম ও শৃঙ্খলাভঙ্গ হয় অনেক বেশি। এ নিয়ে খোদ শিক্ষকদের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সান্ধ্যকোর্সে পরীক্ষা মানেই নকলের ছড়াছড়ি। পরীক্ষার দিন সান্ধ্যকোর্সের শিক্ষার্থীরা ছোট কাগজের নকলসহ পুরো অ্যাসাইনমেন্ট কপি করে পরীক্ষার হলে নিয়ে যায়। থাকে মোবাইলও। ছোট কাগজের টুকরাগুলো মানিব্যাগসহ বিভিন্নভাবে রাখা হয়। তবে অ্যাসাইনমেন্ট এবং মোবাইল দেখলেও শিক্ষকরা সে বিষয়গুলো সঠিকভাবে তদারকি করেন না। শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরাগ দেখান বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। নকল ছাড়াও সান্ধ্যাকোর্সের শিক্ষার্থীরা ছাড় পায় গড় উপস্থিতির ক্ষেত্রেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী বছরে ৬০ শতাংশ উপস্থিত না হলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয় না। তবে এক্ষেত্রে সান্ধ্যকোর্সের শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর থেকে পাওয়া এক তথ্যে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৯৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এই ৯৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭৪ জন রাবির নিয়মিত শিক্ষার্থী, ১৯ জন অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী। আর মাত্র ৫ জন সান্ধ্যকোর্সের শিক্ষার্থী। সান্ধ্যকোর্সে নকল বাড়লেও ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফখরুল ইসলাম বলেন, দিনে পড়ুক আর রাতে পড়ুক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সমান পরিবেশ এবং আইন থাকা উচিত। সেই বিষয়টি মেনে চলার চেষ্টা করি। তবে সান্ধ্যকোর্সে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কম। সান্ধ্যকোর্সে এমন অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. বাবুল ইসলাম বলেন, বিভাগ ও কলেজগুলো থেকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম ও আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সর্বশেষ খবর