বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার মদত দেওয়ার অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী জাবির দর্শন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে আটকিয়ে ঢাকার কোতোয়ালি থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে গতকাল তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক গণমাধ্যমকে বলেন, জাবির এক শিক্ষার্থীর করা মামলায় অধ্যাপক ফরিদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর গত ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ-বহিরাগত সন্ত্রাসী ও পুলিশ হামলা করে। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুজন উপাচার্য, প্রক্টরসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ মোট ২১৪ জনকে আসামি করা হয়। অধ্যাপক ফরিদ ৮ নম্বর আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে মধ্যরাতে ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা মিলে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে অধ্যাপক ফরিদ আহমদসহ কয়েকজন হামলাকারীদের নির্দেশনা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ঘটে যাওয়া ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার অন্যতম মদতদাতা ছিলেন অধ্যাপক ফরিদ। এসব অভিযোগে গত ১৮ আগস্ট ফরিদ আহমদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তার নিজের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের একটি চ্যাটবক্স ফাঁস হয়।
চ্যাটবক্স বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক জেবুন্নেসার লেখা ‘আমাদের এত শিক্ষক আহত হয়েছেন। আমরা না খেয়ে আছি। আমাদের খবর কাউকে নিতে দেখিনি।’ এ মেসেজের প্রত্যুত্তরে অধ্যাপক ফরিদ শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আর একটু অপেক্ষা করুন। রাজাকারদের পরাজয় সময়াসন্ন। আপনাদের কষ্টের বিনিময়ে দেশ আগামী দিনে শুদ্ধ ধারায় এগিয়ে যাবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’