২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০৮:৪৬

পাঠশালা’র আসরে মুক্তিযুদ্ধের বই, চলচ্চিত্র নিয়ে আলোচনা

অনলাইন ডেস্ক

পাঠশালা’র আসরে  মুক্তিযুদ্ধের বই, চলচ্চিত্র নিয়ে আলোচনা

দর্শন-সমাজ-সংস্কৃতি-সাহিত্য-শিল্পকলা-বিজ্ঞান চর্চ্চা কেন্দ্র 'পাঠশালা'র এবারের আসর বসে গত ১৪ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে ৬টায় এগলিনটন স্কোয়ার টরন্টো পাবলিক লাইব্রেরীতে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে সামনে রেখে সাজানো ছিল আসরটি।

ফারহানা আজিম শিউলীর সঞ্চালনায় প্রথম পর্বে মার্কিন কূটনীতিক আর্চার কে ব্লাড এর "The Cruel Birth of Bangladesh - Memoirs of an American Diplomat" বইটি নিয়ে আলোচনা করেন কাজী জহির উদ্দিন।

২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ঢাকা শহরে গণহত্যা শুরু করার পর ২৮ মার্চ , ১৯৭১ তারিখে  আর্চার ও তাঁর ২০ জন সমর্থক সহকর্মী ভিন্নমত পোষণ করে তাঁদের  স্বাক্ষরিত এক  তারবার্তা ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠান। আর্চার তাতে কেবল স্বাক্ষরই করেন নি, বাড়তি এক ব্যক্তিগত নোটও লিখেছিলেন। এতে তিনি লিখেছিলেন, “আমি বিশ্বাস করি, পূর্ব পাকিস্তানে এখন যে সংগ্রাম চলছে, তার সম্ভাব্য যৌক্তিক পরিণতি হলো বাঙালিদের বিজয় এবং এর পরিণতিতে একটি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা।" নিরীহ বাঙালির উপর পশ্চিম পাকিস্তানিদের এই আক্রমণকে তিনি 'পরিকল্পিত গণহত্যা' বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উদযাপন কালে আর্চারকে আমন্ত্রণ জানান। ২৫ বৎসর পর বাংলাদেশ সফরকালে তিনি তাঁর পুরানো বন্ধু এবং সহকর্মীদের সাক্ষাৎ পান এবং তারা সকলে ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে  তাঁর ভূমিকা নিয়ে বই লিখতে অনুরোধ করেন। ১৯৯৮ সালে ইউ এস স্টেট ডিপার্টমেন্ট পুরানো সব দলিল পত্র এবং টেলিগ্রাম সমূহ জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পর, আর্চার কে ব্লাড ‘The Cruel Birth of Bangladesh – Memoirs of an American Diplomat’ লেখার কাজে হাত দেন।

আর্চার অবস্থান নিয়েছিলেন মানবতার পক্ষে, প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন নিক্সন-কিসিঞ্জারের অন্ধ ইয়াহিয়া-ঘেঁষা নীতির। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন।  এই বইটিতে তিনি তাঁর কাজের যৌক্তিক ব্যাখ্যা তুলে ধরেন এবং  বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।আর্চার কে ব্লাড এর বইটির নির্যাস ও বই লেখার নেপথ্যের গল্প এভাবে উঠে আসে কাজী জহির উদ্দিনের আলোচনায়।

আসরের দ্বিতীয় পর্বে "মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বাংলাদেশের চলচ্চিত্র" নিয়ে  আলোচনা করেন মনিস রফিক। তিনি মূলত: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত চলচ্চিত্রের ধারাবাহিক তালিকা, প্রধান প্রধান বা আলোচিত চলচ্চিত্রসমূহ,  চলচ্চিত্রের কাহিনী ও নির্মাণ শৈলী এবং চলচ্চিত্র নির্মাতার মনোভাব ও যোগ্যতা, যে সব চলচ্চিত্রের মূল বিষয় মুক্তিযুদ্ধ নয় কিন্তু প্রাসংগিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ এসেছে তেমন কিছু চলচ্চিত্র, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র এবং কাহিনী চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণে সফলতা ও ব্যর্থতা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের সম্ভাব্য পদক্ষেপ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

কাজী জহির এবং মনিস রফিকের আলোচনার সূত্র ধরে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন - পিকলু দে, আশানুর রহমান খোকন, উম্মে রত্না, খসরু চৌধুরী, আখতার হোসেন ও রিয়াজ মাহমুদ।আসরের স্থিরচিত্র ও ভিডিওচিত্র ধারণ করেন যথাক্রমে হাসান মাহমুদ টিপু ও অনন্যা শিলা শামসুদ্দীন।

আসরের শুরুতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং শেষে  জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।

বিডি প্রতিদিন/ ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর