২৫ নভেম্বর, ২০১৫ ১০:৩০

যুদ্ধাপরাধীকে ক্ষমা করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নেই

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

যুদ্ধাপরাধীকে ক্ষমা করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নেই

পুরো সপ্তাহই আলোচনার বিষয় ছিল যুদ্ধাপরাধীর বিচার। যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। ফাঁসি কোনো মানবিক দণ্ড নয়, কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান হানাদাররা যে নির্মম পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তাতে তাদের ফাঁসির চেয়ে কম কোনো দণ্ড ভাবা যায় না। তাদের একমাত্র উপযুক্ত শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, তা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বা ফায়ারিং স্কোয়াডে- যেভাবেই হোক। তা না হলে ভাবীকালে জাতিকে কলঙ্কের বোঝা মাথায় নিয়ে থাকতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বেদনাহত হতেই পারে। কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছে, সে সময় হানাদারদের পৈশাচিক অত্যাচার, হত্যা, খুন-খারাবিতে খোদার আরশ কেঁপেছে, হানাদারদের হৃদয় কাঁপেনি। যেহেতু নিজে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, কত বিয়োগান্ত ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি, কত সোনার সংসারের সকালের হাসি কল্লোলে বিকালে নেমে আসে কবরের নীরবতা। তাদের কাছে যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কান্নার খুব বেশি মূল্য পাবে না, পাওয়ার কথাও না। সময় পার হলে অনেকেই অতীতের দুঃখ-বেদনা ভুলে যায়। দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীরা তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছে, আইনের আশ্রয় পেয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদাররা যখন যাকে খুশি তাকে হত্যা করত, তাদের আত্মীয়স্বজন বুকফাটা কান্নার সুযোগও পায়নি। অনেকের লাশ দাফন করতে পারেনি, কুকুর-বিড়ালের আহার হয়েছে।

কোনো গৃহবধূ হয়তো ঝাড়ু দিচ্ছিল, কোথা থেকে হানাদার এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে তাকে মেরে ফেলে। দুয়ারে খেলা করতে থাকা দেড়-দুই বছরের বাচ্চা বুঝতেও পারে না কী হয়েছে। বন্দুকের কানফাটা আওয়াজে ভয় পেয়ে চিৎকার দেওয়ার আগেই সেও হয়তো শেষ হয়ে যায়। গরু-বাছুর-ছাগল-ভেড়া কোনো কিছুর রক্ষা নেই। সবকিছু ফেলে যে যে দিকে পারে ছুটে পালায়। হানাদাররা চলে গেলে ফিরে এসে কেউ হয়তো দেখে তার সাধের বাড়িঘর পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। বউ পুড়ে ছাই হয়ে আছে। জল্লাদরা আসার আগেও যে প্রাণের ধন কোলে নিয়ে সোহাগ করছিল সে আর ইহজগতে নেই।

এমন কত ঘটনা তখন ঘটেছে যা লেখাজোখা নেই। কত বাড়িঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে লোকজনের সঙ্গে কীটপতঙ্গ পুড়ে মরেছে আল্লাহ কি তা দেখেননি? নিশ্চয়ই দেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সিরাজগঞ্জ থেকে একদল হানাদার যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে ভূঞাপুরের ছাব্বিশায় অতর্কিত আক্রমণ করে পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল। নারী-শিশু-বৃদ্ধা মিলে ৩৬ জনকে মুহূর্তের মধ্যে হত্যা করেছিল। এক মা বাচ্চা বুকে নিয়ে দুধ খাওয়াচ্ছিল সেই অবস্থায় গুলি খেয়ে মা-মেয়ে মারা যায়। সেসব পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের কথা মনে হলে এখনো স্বাভাবিক থাকতে পারি না। কত গ্রামে সময়মতো কবর দেওয়া যায়নি, স্বজনের জন্য অনেকে কাঁদতে পারেনি। বাংলাদেশের সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর বাড়ির ম্যানেজার শামসুদ্দোহা সিদ্দিকী মচু মিয়ার মুখে রিভলবার ঢুকিয়ে এক হানাদার ক্যাপ্টেন গুলি করেছিল। বুলেটের সঙ্গে পাইপে পানি পড়ার মতো বেগে তার রক্ত পড়েছিল- সেসব আজ কে মনে রাখে? কার মনে আছে?

কখনো ভাবতে পারিনি, যুদ্ধের সময় যারা জঘন্য ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তারা স্বাধীন দেশে অহংকার করবে, বুক চিতিয়ে ঘুরবে। কিন্তু তাই হয়েছে। তাই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ায় স্বাধীনতাপ্রেমী আপামর জনসাধারণ খুশি হয়েছে। আরও খুশির কারণ হতো যেসব সরকারি কর্মচারী নির্মম অত্যাচার করেছে তাদেরও যদি বিচার হতো! কেন যেন তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেল। একজন পাকিস্তানি সৈন্য, একজন অফিসার কিংবা একজন জেনারেল কারও বিচার হলো না অথবা কাউকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হলো না। বিশেষ করে যেসব বাঙালি কর্মকর্তা-কর্মচারী পাকিস্তানিদের হয়ে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস জঘন্য কাজ করেছে। উকিল-মোক্তার-ডাক্তারের কথা বলছি না, বলছি এসপি-ডিসি-ওসি যারা ছিল পাকিস্তান সরকারের, পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান হাতিয়ার বা লাঠিয়াল তাদের স্পর্শ করা হলো না। কত এসপি, ওসি, ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর কত নিরীহ মানুষকে মেরেছে তাদের কোনো বিচার হলো না বরং স্বাধীনতার পর তারা প্রমোশন পেল। যেসব সিএসপি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, যেসব পুলিশ অফিসার অংশ নিয়েছিল তাদের চেয়ে অনেক বেশি যারা পাকিস্তান রক্ষায় জান কোরবান করেছে, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তাদের প্রমোশন হয়েছে। হিসাব করলে দেখা যাবে যুদ্ধে অংশ নেওয়া কজন সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছে আর পাকিস্তান-ফেরত কজন হয়েছে? মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া পুলিশ অফিসার কজন আইজি হয়েছে আর কজন পাকিস্তানি জল্লাদ আইজি হয়েছে? স্বাধীনতার পর কুষ্টিয়ার এক রাজাকারকে জেলা জজ ফাঁসি দিয়েছিলেন। গরিব মানুষ দণ্ড শুনে হা হা করে হাসছিল। লোকজন হাসির কারণ জানতে চাইলে সে বলেছিল, ‘আমাকে রাজাকার হিসেবে যে জজ সাব ফাঁসি দিলেন তিনিই আমাকে রাজাকারে ভর্তি করেছিলেন। আমার ফাঁসি হলে তার কী হবে? তাই হাসছি।’ এক রাজার অমন গল্প শুনেছিলাম। এক দাসী রাজার বিছানাপত্র গোছগাছ করতে গিয়ে তার বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। রাজা এসে দেখে তার বিছানায় দাসী ঘুমাচ্ছে। রাজার বিছানায় ঘুমানোর অপরাধে তাকে যখন বেত মারছিল তখন দাসী খিলখিল করে হাসছিল। রাজা যখন জিজ্ঞাসা করে বেতের আঘাতে না কেঁদে তুমি হাসছ কেন? দাসী বলেছিল, দাসী হয়ে রাজার বিছানায় একটু ঘুমানোর জন্য রাজা যদি আমাকে মারে তাহলে স্রষ্টার দুনিয়ায় অত সময় অত আরামে ঘুমানোর জন্য সারা বিশ্বের মালিক আপনাকে কত মাইর-ই না মারবেন তাই কান্নার বদলে হাসছি।

সেদিন ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহর প্রতিক্রিয়া শুনলাম। তিনি বললেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে স্বাধীনতাবিরোধী দালাল-রাজাকারদের মাফ করে দিয়েছিলেন। তিনি যথার্থই বলেছেন। যে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেককেই মাফ করেছিলেন। তার সেই মাফের মূল্য কি সেদিন কেউ দিয়েছে? কেন তাকে সপরিবারে ওভাবে হত্যা করা হলো? জাতির শত্রুদের মাফ করেছিলেন মনে হয় সেদিন তার সেই মাফও অনেকের পছন্দ ছিল না। আমি কাউকেই বিব্রতকর কিছু বলি না। কিন্তু সত্য না বলেও পারি না। ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহর মনে থাকার কথা, তিনি তখন রংপুরের ব্রিগেড কমান্ডার, ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ সংগ্রামীদের সঙ্গে রংপুরের গোবিন্দগঞ্জে তার বাহিনীর এক সংঘর্ষ হয়। কুড়িগ্রামের এক সম্ভাবনাময় যুবক আলমগীর হোসেনসহ নজিবুর রহমান নিহার, আবু বকর সিদ্দিক মুন্না, সউদ মিয়া, বাবন সরকার, আবদুর রহিম আজাদ, মুকুল, রেজাউল করিম রেজা, মোহাম্মদ আলী, বাবুল মিয়া, নূরুল ইসলাম, নূরুল আমিন, রেজাউল করিম ও আরও একজন নিহত হয়। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে এদের মধ্যে ৭-৮ জনকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। আল্লাহ আমাকে সুযোগ দেননি। যদি দিতেন তাহলে তিনিও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে যারা নিহত হয়েছিল তাদের নিয়ে অভিযোগ না উঠলেও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ সংগ্রামী যাদের নিজে দাঁড়িয়ে থেকে হত্যা করেছিলেন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সেসব হত্যার অবশ্যই বিচার হতো।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের প্রাণভিক্ষা নিয়ে কত কিছু শুনলাম। সংবিধান রচনার সময়ই বলে রাখা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, যুদ্ধাপরাধে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার কোনো এখতিয়ার নেই। আসলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কিছুই করার নেই। এই যে কিছুই করার নেই সেটা বলার বা বোঝার ক্ষমতাও মহামান্য রাষ্ট্রপতির নেই। সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির হাত দিয়ে যে কোনো দণ্ড কম-বেশি করা যায় এমন একটা বিধান আছে। বিচারক যেমন অন্ধ, নিজে থেকে কিছু করতে পারেন না, সাক্ষী-প্রমাণের প্রয়োজন হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতিও ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা তিনি নিজে প্রয়োগ করতে পারেন না। রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমা বা অন্য কোনো কাজ করতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করতে হয়। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া তার কিছুই করার নেই। সংসদে যেমন ‘হ্যাঁ বলুন আর না বলুন’ অনেকটা সে রকম। মহামান্য রাষ্ট্রপতি নিমিত্ত মাত্র। তার নামে সবকিছু হয়, তাই বলে তিনি সবকিছু নন। বলা হয় তিনি প্রধান বিচারপতি এবং প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে পারেন। এটাও একেবারে অন্তঃসারশূন্য। তিনি তা-ও পারেন না। মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেন, যার প্রধান বিচারপতি হওয়ার কথা বা সরকার যাকে পছন্দ করেন অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা অনুসারে যার হওয়া উচিত তিনিই হন। প্রধানমন্ত্রীও যে দল সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সেই দলের নেতা যিনি তাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আহ্বান করেন, এখানেও কোনো ক্ষমতার ব্যাপার নেই। ক্ষমতা বা পছন্দ-অপছন্দ বঙ্গভবনে নয়, ওটা অন্য কোনোখানে। আরেকটা কাজ মহামান্য রাষ্ট্রপতি করেন, সেটা হচ্ছে মান্যবর বিদেশি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণ। সেখানেও রাষ্ট্রপতির কিছুই করার নেই। কোন দেশের রাষ্ট্রদূত কে হবেন সেটা সেই রাষ্ট্র ঠিক করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিচার-বিবেচনা করে তার সম্পর্কে যদি কোনো আপত্তি না থাকে, তাকে গ্রহণ করে, তিনি এসে আনুষ্ঠানিকভাবে মহামান্য রাষ্ট্রপতির হাতে পরিচয়পত্র দেন।

জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে আরও অনেক কথা হবে। কিন্তু যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু নিহত হলে খন্দকার মোশতাক বঙ্গভবনে সংসদ সদস্যদের এক সভা ডেকেছিলেন। খুনি প্রেসিডেন্টকে বৈধতা দেওয়া হয় এ রকম অভিযোগ তুলে অনেকেই যেতে চাননি। আবার কারও কারও মত ছিল বঙ্গভবনে গিয়ে খুনি মোশতাকের প্রতি অনাস্থা দিয়ে আসবেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে কতটা জড়িত তা উদ্ঘাটন করবেন। শেষ পর্যন্ত অনেকেই গিয়েছিলেন। সত্যিই সেদিনের সভায় খন্দকার মোশতাক কোনো সমর্থন পাননি বরং বিরোধিতা পেয়েছিলেন, গালাগাল শুনেছিলেন। বর্তমান আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমার তেমন জানাশোনা নেই, দু-এক বার দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। কিন্তু আইনমন্ত্রীর বাবা সিরাজুল হক আমাকে আপন ভাইয়ের মতোই জানতেন, ভালোবাসতেন। একসময় আমরা দুজনই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম। আমি ছিলাম এক নম্বর। সিরাজুল ভাইয়ের সঙ্গে অনেক কথা হতো। তিনি এবং পঞ্চগড়ের সিরাজুল ইসলাম আমায় বলেছিলেন, ‘মোশতাককে তো যা তা গালাগাল করে অনাস্থা দিয়ে এলাম। বঙ্গভবন থেকে বের হতেই রেডিও-টিভিতে শুনলাম, এমপিরা তাকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন, তাই তিনি বৈধ রাষ্ট্রপতি।’ যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ক্ষেত্রে একই রকম বলা চলে। তারা যদি স্বাক্ষর করে সামান্য কোনো কাগজও দিয়ে থাকেন তাতে তারা যা কিছুই লিখে থাকুন তার সত্যিকারের অর্থ হলো তারা বিচার মেনে নিয়েছেন এবং রাষ্ট্রপতির কাছে অনুকম্পা চেয়েছেন। যত সাধু ভাষায় বলা হোক বিচারের এ রকম শেষ পর্যায়ে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো আবেদন করার অর্থই প্রাণভিক্ষা চাওয়া। ও রকম অবস্থায় রাষ্ট্রপতির কাছে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের বাইরে আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই।

এখন যদি এমন হয় জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী তাদের স্বাক্ষরযুক্ত কোনো আবেদন করেননি যা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণই নাটক, তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের পরিবার-পরিজন যা বলছে তাদের কথা সত্য। আর যদি তাদের স্বাক্ষরযুক্ত কোনো কাগজ তারা দিয়ে থাকেন তাতে যা-ই লেখা থাকুক তাহলে সরকারের কথা সত্য। ক্ষমাভিক্ষা বা অনুকম্পা প্রার্থনা ছাড়া সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অন্যকিছু বোঝায় না।


লেখক :  রাজনীতিক

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৫ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা

সর্বশেষ খবর