৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৫:০৩

পুনর্বার ভাবো, কেমন নেতৃত্ব চাইছো তোমরা?

শিবলী হাসান

পুনর্বার ভাবো, কেমন নেতৃত্ব চাইছো তোমরা?

প্রতীকী ছবি

পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন এক সময়ের তারকা ক্রিকেটার, প্লেবয় ইমরান খান। তার রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ প্রায় দুই দশক আগে। ১৯৯৬ সালে ‘পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ পার্টি’ বা পিটিআই গঠনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন ইমরান, বিভিন্ন দল থেকে আসা দলছুটদের নিয়েই মূলত পিটিআই এর কার্যক্রম শুরু হয়েছিলো। অতঃপর প্রায় দুই দশকেরও অধিক সময় ধরে রাজনীতির বিভিন্ন চড়াই উৎরাই পেরিয়ে গত ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ইমরান খান। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পরিবর্তন আনবেন। শিক্ষা আর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাবেন, তরুণদের জন্য সৃষ্টি করবেন কর্মসংস্থান। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই তিনি বেশ কিছু ঘোষণা দিয়েছেন যা পত্রিকার প্রথম পাতায় স্থান করে নিয়েছে এবং চারদিকে শোরগোল পড়েছে। এর উত্তাপ ছড়িয়ে পরেছে বাংলাদেশেও। একদল ইমরান বন্দনায় এতোটাই মগ্ন যে, ইসলামের খলিফা ওমর বা তুরস্কের কামাল আতাতুর্কের সাথে তুলনা শুরু করেছে! এমনকি নিজেদের কপালে এমন প্রধানমন্ত্রী কবে জুটবে এই হা হুতাশে দিনাতিপাত শুরু করে দিয়েছে! তা আসুন দেখা যাক কেমন প্রধানমন্ত্রীর জন্য হাপিত্যেশ করছেন বাংলাদেশে থাকা কিছু মানুষ, কেমন চরিত্র ও মানবিক গুণাবলীর প্রধানমন্ত্রী তারা চাইছেন, সর্বোপরি কেমন বাংলাদেশ তারা চাইছেন!
 
পাকিস্তানের মূল সমস্যা সেনাবাহিনী, উগ্র ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ এবং লিঙ্গ বৈষম্য। ২২ গজের তারকা ইমরান খান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কথা বললেও পাকিস্তানের মূল সমস্যা উনি চিহ্নিত করতে পারেননি বা করতে চাননি, সমাধান তো বহু পরের ব্যাপার। ইমরান খানের ক্ষমতায় আরোহণকে যারা গণতন্ত্রের জয়যাত্রা হিসেবে দেখছেন তারা হয়তো ভুলে গেছেন পাকিস্তানের দীর্ঘ সত্তর বছরের সেনা নিয়ন্ত্রণের ইতিহাস! পাকিস্তানে কখন কে ক্ষমতায় আসবে এবং কতোদিন ক্ষমতায় থাকবে তার পুরোটা নির্ভর করে সেনাবাহিনীর ইচ্ছের উপর। সেনাবাহিনী যাকে চাইবেন সেই ক্ষমতায় আসবে। একমাত্র আসিফ আলী জারদারি বাদে পাকিস্তানের ইতিহাসে কোন প্রধানমন্ত্রীই তার পূর্ণ মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি।

ইমরান খান মেয়াদ শেষ করতে পারবেন কিনা তা নির্ভর করবে কতোদিন তিনি সেনাবাহিনীর স্বার্থে কাজ করবেন তার উপর। যারা বলেন পাকিস্তানের বিচার বিভাগ স্বাধীন তাদের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই, একটি সরকার যখনই সেনাবাহিনীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাবে তখনি সেই সরকার বা সরকার প্রধানকে কিভাবে আইনি বা সাংবিধানিক জটিলতায় ফেলতে হবে তার কাজটি সূচারুভাবে করেন সেই দেশের উচ্চ আদালত। এক্ষেত্রে ক্রীড়ানকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় উচ্চ আদালত ও আমলাতন্ত্র। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে নওয়াজ শরিফ। সেনাবাহিনী যখন কোনভাবেই নওয়াজ শরিফকে হেলাতে পারছিলো না তখন আদালত অদ্ভুত সব পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এবং নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সেনাবাহিনী নওয়াজের প্রতি এতোটাই ক্ষুব্ধ ছিলো যে, দলের চেয়ারম্যানের পদ থেকেও তাকে অপসারণ করা হয় এবং আজীবনের জন্য রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়া হয়। যেহেতু ইমরান খান সরাসরি সেনা-সমর্থনের ওপর ভর করে ক্ষমতায় এসেছেন তাই তিনি কতোদিন থাকবেন তাও নির্ভর করছে সেনাবাহিনীর উপর, অন্তত পাকিস্তানের ৭০ বছরের ইতিহাস তাই বলে। তাই বাংলাদেশে থাকা যেসব ব্যক্তিবর্গ পাকিস্তান আর ইমরান খানে মগ্ন আছেন তারা কি বাংলাদেশে ‘সেনাবাহিনীর পুতুল’ কোন সরকার দেখতে চান? এমন বিচারবিভাগ চান যারা সেনা নিয়ন্ত্রিত? আবার এমন সেনাবাহিনী চান যারা দিনের পর দিন দেশকে কুক্ষিগত করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করবে?
 
পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান সমস্যা ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ। এসবের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেবেন ইমরান খান? এই বিষয়ে কি সুস্পষ্ট কোন ধারণা এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে? খুব সহজভাবে যদি বলতে হয় তবে এর উত্তর হবে ‘না’। ইমরান খান এই বিষয়ে কোন ধারণা দেননি এমনকি ধর্মীয় সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কখনো তিনি শক্ত অবস্থান নিতে পারবেন না। কারণ ইমরান খান নিজেই জঙ্গিদের আশীর্বাদপুষ্ট। ইমরান খানের নিকট অতীত ঘাটলেই আমরা বিস্তারিত পেয়ে যাবো। পিটিআই গঠনকালে ইমরানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলো বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠন তালেবান ও আল-কায়েদা। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তার দল জামায়াত-ই-ইসলাম ও কওমি ওয়াতানের সঙ্গে আঁতাত করে খাইবার পাকতুনখাওয়া প্রদেশে (প্রাক্তন উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ) সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়। নির্বাচনে তাকে জোরালো সমর্থন দিয়েছিল তালেবান ও আল-কায়েদা গোষ্ঠী । ইতিপূর্বে জঙ্গি দমনের বদলে তাদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানিয়ে বারবার সমালোচনার শিকার হয়েছেন ইমরান খান। এবারের নির্বাচনে পাকিস্তানে ধর্মীয় ডানপন্থীদের সরাসরি আনুকূল্য পেয়েছে ইমরান। ‘তালেবানের জনক’ খ্যাত মাওলানা সামিউল হক ইমরানের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তবে এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি সামি উল হকের সঙ্গে জোট বেঁধে। মোল্লা ওমর ও জালালুদ্দিন হাক্কানির মতো তালেবান জঙ্গিরা তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা থেকেই পড়াশোনা করেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে আল কায়েদাসংশ্লিষ্ট জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-মুজাহিদিন প্রকাশ্যেই ইমরান খান ও তার দলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তাই তালেবান এবং আল-কায়েদা মদদপুষ্ট কোন সরকার প্রধানকে যখন কেউ আইডল ভাববে তখন বুঝে নিতে হবে এরা কোন গোত্রীয়! এরা কি তবে মোল্লা ওমর আদর্শিক কোন নেতাকে চাইছে? গণহত্যাকারী জামায়াতে ইসলামের মদদপুষ্ট কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চাইছে? 
 
সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নেতার রাজনৈতিক মতাদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্যক্তিগতভাবে কতোটুকু সমাজ সংস্কার চান ইমরান খান? সেটাই বড় প্রশ্ন। ইমরান খানের সমাজ সংস্কারের একটি নমুনা তুলে ধরছি। পাকিস্তানের সবচেয়ে ঘৃণ্য আইনের একটি হচ্ছে ব্লাসফেমি। এটি মূলত প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় একটি আইন যা ইউরোপে উদ্ভব হয়েছিল। সে সময় রাজা বাদশাদের বলা হত ঈশ্বরের প্রতিনিধি, তাই রাজাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বলা, এইভাবে রাজার অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনগণের আন্দোলন যাতে গড়ে না উঠতে পারে সেই জন্য ওই সময় ব্লাসফেমি নামের এই কালো আইন তৈরি হয়েছিল। পাকিস্তানে এই আইন বলবৎ আছে।

অবিভক্ত ভারতবর্ষের দণ্ডবিধিতে ১৮৬০ সালে ব্লাসফেমি আইন যুক্ত হলেও ১৯৮৬ সালে দণ্ডবিধির ২৯৫ ধারায় দুটি উপধারা সংযুক্ত করা হয় ও ধর্মসংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড, জরিমানা এবং একসঙ্গে উভয় রকমের শাস্তির বিধান করা হয়। এমনকি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে (কাদিয়ানি ও লাহোরি গ্রুপ) নিজেদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুসলমান বলে দাবি করা, তাদের ধর্মবিশ্বাস প্রচার করা, তাদের প্রার্থনার স্থানকে ‘মসজিদ’ আখ্যায়িত করার অপরাধেও কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধান আছে। মূলত এই আইনের মাধ্যমে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হয় এবং রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে এই আইনটি ব্যবহৃত হয়।

পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন-এর এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান দণ্ডবিধির উল্লিখিত ধারাগুলোর আওতায় ধর্মসংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ১৯৮৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মামলা হয়েছে মোট এক হাজার ২৭৪টি। বেশিরভাগ মামলার শিকার হয়েছেন খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে মুসলমান সম্প্রদায়ের অনেক মানুষও ধর্মের অবমাননার অভিযোগে মামলার শিকার হয়েছেন। অনেক মামলা হয়েছে আহমদিয়াদের বিরুদ্ধেও। কিন্তু বিচার-প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই খুন হয়েছেন ব্লাসফেমি মামলার ৪৬ জন আসামি। তাদের মধ্যে আছেন পাঁচজন মৌলভি ও পেশ ইমাম, তিনজন শ্রমিক, একজন শিক্ষক ও একজন ব্যবসায়ী। ব্লাসফেমি মামলার অনেক আসামি খুন হয়েছেন খোদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে।

মধ্যযুগীয় বর্বর এই আইন এখনো যে কোন সভ্য রাষ্ট্রে থাকতে পারে তাই কল্পনাতীত। অথচ পাকিস্তানে তা এখনো বহাল আছে এবং আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ইমরান খান এই ব্লাসফেমি আইনের একজন কট্টর সমর্থক। এছাড়া শিক্ষা, নারীবাদের ব্যাপারে সেকেলে দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন ইমরান খান। তাই যারা ইমরান খানকে একের পর এক সমর্থন দিচ্ছেন তারা কী এমন বর্বর আইন বাংলাদেশে চান? এমন অমানবিক কোন সরকার প্রধান বাংলাদেশ দেখতে চান?
 
এদিকে পাকিস্তানের ক্যাপিটাল টিভির টকশো’র একটি ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। সম্প্রতি প্রচারিত এই অনুষ্ঠানে ইমরান খানের বিভিন্ন পলিসি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল এবং ইমরান খান পাকিস্তানকে ‘সুইডিশ মডেল’ এ বদলে দেবার যে ঘোষণা দিয়েছেন সেই বিষয়ে বিস্তর কথা চলছিলো। আলোচনার এক পর্যায়ে পাকিস্তানের সিনিয়র উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক জায়গাম খান বলেন, সুইডেন মডেলের উদাহরণ না দিয়ে পাকিস্তানের উচিত প্রথমে বাংলাদেশ হওয়ার চেষ্টা করা, তা হতে কমপক্ষে ১০ বছর সময় লাগবে এবং ততদিনে বাংলাদেশ উন্নয়নের দিক দিয়ে আরও অনেক দূর চলে যাবে। এই বক্তব্য দিয়েই উনি ক্ষান্ত থাকেননি বরং তিনি তথ্য দিয়ে বললেন, দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানের অনেক নিচে, বাংলাদেশ বিদেশে বছরে রফতানি করে ৪ হাজার কোটি ডলার আর পাকিস্তানের এই পরিমাণ হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ কোটি বিলিয়ন।

বাংলাদেশে বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, যার বিপরীতে পাকিস্তানে এর পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। প্রতিবছর পাকিস্তানে জনসংখ্যা বাড়ছে ২.৪ শতাংশ হারে আর বাংলাদেশে বাড়ছে ১.১ শতাংশ হারে। দুই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তুলনা করতে গিয়ে জায়গাম বলেন, যেখানে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ২.৪ শতাংশের ওপর উঠতে পারেনি, সেখানে বাংলাদেশ তা ৭ শতাংশের ওপর ধরে রেখেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। অথচ আজকের বাংলাদেশ এক সময় পাকিস্তানের অংশ ছিল।

তিনি আরও বলেন, কোনও একটি দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে হলে তার জন্য চাই যোগ্য নেতৃত্ব যা বাংলাদেশ দেখিয়েছে। ১০ বছর পর বাংলাদেশ আরও অনেক দূরে চলে যাবে’। বাকি দু’জন আলোচকও তার সঙ্গে একমত পোষণ করলেন।
 
হুম, পাকিস্তান এখন ‘বাংলাদেশ মডেল’ এ উন্নয়নের রাস্তা খুঁজছে, পাকিস্তান এখন বাংলাদেশের মতো যোগ্য নেতৃত্ব চাইছে। বাংলাদেশে হয়তো এখনো সুশাসন নিশ্চিত হয়নি, দুর্নীতি পুরোপুরি দমন করা যায়নি, কিছু ক্ষেত্রে বিচারবিভাগ এর ভূমিকা হয়তো অস্বচ্ছ কিন্তু বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেক বেড়েছে, দুর্নীতি আগের চাইতে অনেক কমেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যাপকতার কারণে অন্যায়ের প্রতিবাদ হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই সুশাসন নিশ্চিত হচ্ছে। আর তাই এর প্রভাব পড়েছে সর্বক্ষেত্রে। বাংলাদেশ সন্ত্রাস দমনে পুরো বিশ্বের রোল মডেল হয়েছে। সন্ত্রাসবাদের ব্যাপকতা যেখানে চরম আকার ধারণ করেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বিশ্বের পরম শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো যেখানে সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ হচ্ছে সেখানে ভৌগলিক অবস্থানে সবচাইতে ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ দমনে একের পর এক সফল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তান তো বটেই অনেক সামাজিক সূচকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতকে ছাড়িয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ।

যে বিশ্বব্যাংক একসময় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো এখন তারাই এসে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রশংসা করছে। আজ নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবীদ অমর্ত্য সেন উন্নয়নের মডেলের কথা উঠলেই বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে টেনে আনছেন। এই প্রাপ্তি বা সফলতার ভাগ কি শুধুই বাংলাদেশ সরকারের? আমাদের না? বাংলাদেশিদের না? সরকারের ব্যর্থতা যেমন আমাদের মাথা নিচু করে দেয় ঠিক তেমনি সফলতা আমাদের উচ্চশীরে আরোহণ করায়। শুধু দল বা ব্যক্তি বিদ্বেষের কারণে আমরা যেনো নিজেদের ছোট না করি। সফলতা বা গৌরবের ইতিহাসকে যেনো ধূলোয় মিশিয়ে না দেই। একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তানকে আইডল মানা, জঙ্গিদের আশীর্বাদপুষ্ট ইমরান খানকে নেতা মানার মতো হীনমন্যতা যেনো আমাদের মাঝে না আসে! পাকিস্তান বা ইমরান খানকে আইডল মানার আগে যেন আমাদের পূর্ব ইতিহাস স্মরণ করি। 
 
লেখক: তরুণ সমাজকর্মী 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

সর্বশেষ খবর