রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

দলীয় কর্মকাণ্ডে নেই আওয়ামী লীগ, উত্তাপ ছড়ানোর চেষ্টায় ব্যর্থ বিএনপি

দলীয় কর্মকাণ্ডে নেই আওয়ামী লীগ, উত্তাপ ছড়ানোর চেষ্টায় ব্যর্থ বিএনপি

নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের রাজনৈতিক কমকাণ্ড এখন অনেকটাই নিরুত্তাপ। দলীয় কার্যক্রম না থাকায় নেতাকর্মীরা নিজেদের কাজ নিয়েই বেশি ব্যস্ত। নীলফামারী জেলা, সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ এসব কমিটির কার্যক্রম চলছে দায়সারাভাবে। সঠিক সময়ে কাউন্সিল না হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের ত্যাগী নেতা-কমীদের মধ্যে এক ধরণের হতাশা কাজ করছে। এতে নতুন নেতৃত্বের বিকাশ ঘটছে না বলে মনে করছেন অনেকেই। অপরদিকে গত ২৩ অক্টোবর নীলফামারী হাইস্কুল মাঠে খালেদা জিয়ার জনসভার মধ্য দিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক অঙ্গনকে কিছুটা গতিশীল করার চেষ্টা করলেও তাতে বিশেষ কোনো সুফল আসেনি। অভ্যন্তরীন কোন্দলে গোটা জেলায় অনেকটাই চুপসে গেছে বিএনপি। উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের এক কাতারে আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জেলা নেতাদের। এরমধ্যে নেতৃত্বের বিরোধ তো রয়েছেই। এ কারনে তৃনমূল নেতা-কর্মীরা ক্রমেই বিএনপি রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরে যাচ্ছেন।

এদিকে জলঢাকা উপজেলায় নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের কারনে সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে বিএনপির পাল্টা পাল্টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সময় সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নীলফামারী বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে কিছুটা উত্তাপ ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে মামলা-গ্রেফতারের ভয়ে বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে সংশয় রয়েছে।  মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও শ্রমিকদল।

বিগত ২০০৬ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হলেও ৬ বছর পর কেন্দ্র পুর্নাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়। ৩বছর মেয়াদী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও কাউন্সিল না হওয়ায় নেতা-কর্মীরা দু’ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। এ ধারা দু’টির নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ এবং জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক অ্যাড. মমতাজুল হক। অপরদিকে জেলা যুবলীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে দীঘদিন। আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে চরম সমন্বয়হীনতা। এ কারনে কিশোরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন নিয়ে বিক্ষোভ, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও হরতালের মতো কর্মসুচী পালন করেছে নেতাকর্মীরা।

দীর্ঘদিন পর গত ৩০ নভেম্বর জেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে সভাপতি পদে অ্যাড. আনিসুল আরেফিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক পদে সামসুজ্জামান জামানের নাম ঘোষণা করা হয়। ১৫১ সদস্যের কমিটির অন্যান্যদের নাম এখন ঘোষণা করা হয়নি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান বলেন, গত ২৩ অক্টোবর নীলফামারী হাইস্কুল মাঠে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সফল জনসভার পর বিএনপিতে আর কোন দলাদলি কোন্দল বা উপ-কোন্দল নেই। নেত্রীর আন্দোলনের ডাকের অপেক্ষায় জেলার শতভাগ নেতা-কর্মী প্রস্তুত রয়েছে। আন্দোলন সফল করতে যে কোন ধরণের বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন তা প্রতিহত করা হবে। নীলফামারীতে বিএনপির সব ইউনিটের কাউন্সিল হয়ে গেছে। বিএনপি আজ ঐক্যবদ্ধ। নেত্রীর ডাক পেলেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলনে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেকেই জামিনে রয়েছেন। অনেকেই গ্রেফতার ও পুলিশী হয়রাণী থেকে বাঁচতে আত্মগোপনে গেছেন। তবে তাদের কারনে আন্দোলনের কোন ক্ষতি হবে না।

জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মমতাজুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী। নেই কোন গ্রুপিং-লবিং। নেতা-কর্মীরা সু-সংগঠিত। সম্প্রতি ডোমার ও ডিমলা উপজেলায় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যান্য ইউনিটগুলোতে কাউন্সিলের প্রক্রিয়া চলছে। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব ইউনিটের কাউন্সিল শেষ করা হবে।

বিডি-প্রতিদিন/২১ ডিসেম্বর ২০১৪/আহমেদ

সর্বশেষ খবর