সোমবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

দিনাজপুরে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

দিনাজপুরে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

আমের গাছে গাছে এখন মুকুলের সবুজ সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় গাছে গাছে শুধু মুকুল আর মুকুল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখনই দিনাজপুরে শতকরা ৮০ ভাগ আমগাছে মুকুল এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। মুকুল দেখে বাগান মালিকরা আশাবাদী। তারা মনে করছেন বাগান বিক্রি করে এবারও লাভবান হবেন।

ফাল্গুন মাসের শুরুতেই দিনাজপুরের সদর, নবাবগঞ্জে, বিরলসহ বিভিন্ন উপজেলার আম বাগানগুলোতে মুকুলের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। বিস্তৃত আম বাগানগুলোতে শুধু মুকুল আর মুকুল।

জেলায় আম্রপালী, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, সূর্যপূরী, আসিনিয়া, ছাতাপড়া, ফজলী, চিনি ফজলী, সুরমাই, মিশ্রিভোগসহ দেশী জাতের আমের মুকুলে ভরে গেছে আম গাছগুলো। সদরের কসবা, বাশেরহাট, পুলহাট, পাচবাড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায় এবার আম গাছের ডালে ডালে প্রচুর মুকুল এসেছে।

গত বছর এসময়ের চেয়ে এবার বেশি গাছে মুকুল এসেছে। তবে আর কয়েকদিনের মধ্যেই শতভাগ আমগাছে মুকুল এসে যাবে। বৈশাখ মাসে আম পাকা শুরু হয় এবং আশ্বিন ও কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত বাজারে আম পাওয়া যাবে। কিন্তু ইতোমধ্যে আম বাগান বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। আম বাগান নিয়ে ৬ মাস ধরে ব্যবসা চলবে।
জেলার আম চাষী বাগান মালিকদের ভাল ফলন পাবার ব্যাপারে আশাবাদি। আম বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হবার ¯^প্ন দেখছেন তারা। আগাম বিক্রি হয়েছে কিছু  বাগান।

তবে দেশে হরতাল-অবরোধ থাকায় অনেক বাগান মালিক ভালো দামের আশায় অপেক্ষা করছেন। আমের ভালো ফলন এবং রং ঠিক রাখার জন্য এখন থেকে গাছের গোড়ায় পানি দেয়া হচ্ছে। মুকুল থেকে গুটি হলে ভিটামিন রিপকট স্প্রে করা হবে বলে বাগান মালিকরা জানালেন।

কৃষি বিভাগ জানায়, আম ও লিচুর জন্য বিখ্যাত দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় ছোট বড় মিলে ২১২৬টি আম বাগানে প্রায় আড়াই লাখ আম গাছ রয়েছে। প্রতি মৌসুমে এ জেলার আম বিক্রি থেকে অর্জিত হয় গড়ে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা। ২ হাজার  ৬৪৬ হেক্টর আবাদী জমিতে এবং ১ হাজার ৬শ' হেক্টর বসতবাটিতে আম বাগান করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, প্রকৃতি এবং আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবারও দিনাজপুরে ফলন হবে বাম্পার। তবে রেকর্ড পরিমাণ ফলন আশা করা হচ্ছে সদর, বিরল, কাহারোল, চিরিরবন্দর, বীরগঞ্জ ও নবাবগঞ্জ এলাকার বাগানগুলো  থেকে। তিনি জানান, গত আমের মওসুমে দিনাজপুর জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল ৬৮ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন।

সদরের বাগান মালিক আসাদুজ্জামান লিটন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবাই এখন বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। আমের ভালো ফলনের আশায় বাগান মালিক-বাগান ক্রেতারা।

বিভিন্ন বাগান মলিকেরা জানান, মুকলে যাতে কোন ছত্রাক জাতীয় রোগবালাই না লাগে এজন্য কীটনাশক স্প্রে করে পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছে।

আম ব্যবসায়ী এনতাজুল হক জানান, এ বছর যেভাবে গাছে গাছে মুকুল ধরেছে আবহাওয়া তারতম্য না ঘটলে এবারে প্রায় চার বছরের আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫/ রশিদা

সর্বশেষ খবর