শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

জৈব পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষে সাফল্য

জৈব পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষে সাফল্য

একের পর আধুনিক প্রদ্ধতি ও নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি ক্ষেত্রে যিনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন তার নাম বেলাল আহমদ ইমরান। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিন্দা উদ্যমী এ যুবক ইতোমধ্যে বিশ্বনাথ উপজেলা তথা সিলেট বিভাগের কৃষদের মাঝে মডেল হিসেবে নিজের স্থান করে নিয়েছেন।

সিলেট বিভাগে বেলালই প্রথম দেশীয় শিং মাছের রেণু পোনা উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেন। এর স্বীকৃতি স্বরূপ ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক, ২০১৩’ লাভ করেন তিনি। কাজের স্বীকৃতি বেলালের স্বপ্ন আরও প্রসারিত করে। এখন মাছ চাষের মৌসুম নয় তবুও থেমে নেই তিনি। শুরু করেন সবজি চাষ।

স্থানীয়ভাবে অল্পপরিচিত ভিন্নধর্মী সবজি ক্যাপসিকাম গ্রামের মাঠে চাষ করে নিজের সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। সবজি চাষেও বিপ্লব ঘটিয়েছেন তিনি।  

গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিন বেলালের গ্রামের বাড়ি রামধানায় যাওয়া হয়। গিয়ে দেখা য়ায়, আগামী মৌসুমে মাছ চাষের জন্যে পুকুর তৈরির পাশাপশি পুকুর পাড় ও পাশের পরিত্যাক্ত ফসলি জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছেন ক্যাপসিকাম, নাগা মরিচ (স্টার চিলি) ও সুর্যমুখী। এছাড়াও তার বাড়ির আঙ্গিনায় পারিবারিক সবজি বাগানে রয়েছে ব্রকোলি, লেটুস পাতা, চেরি টমেটো, বান্ডা মরিচ, ধনিয়া পাতা, পেন মরিচ, শিম, লাল শাক, ফুলকপি, বাধাকাপি, ঢেড়শ, ক্যালিপনিয়া ওন্ডার ক্যাপসিকাম।

বেলালের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন মাছের রেণু পোনা উৎপানের মৌসুম না হওয়ায় গ্রামে ভিন্নধর্মী সবজি চাষে মনযোগী হন তিনি। যেই ভাবা সেই কাজ। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যান তথ্য বিভাগের প্রধান ড. শহীদুল ইসলামের কাছ থেকে ক্যাপসিকামের বীজ সংগ্রহ ও চাষ প্রদ্ধতির জ্ঞান অর্জন করে স্বপ্ন চাষে মাঠে নামেন তিনি। গত বছরের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে মাত্র ২৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে জৈব প্রদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক নিয়মে পরিচর্যার ফলে অল্পদিনেই ফলন শুরু হয় ক্যাপসিকামের। চার মাসের মাথায় ৪ হাজার ৭০০ গাছে এ পর্যন্ত ফলন হয়েছে ১৯শ' কেজি যার বাজার মূল্য ২ লক্ষ ৯ হাজার টাকা। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে তার এ বাগান থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ফলন আসবে বলে তিনি আশাবাদী।                 

বেলালের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, কৃষি নিয়েই আমার স্বপ্ন। ঘুম থেকে উঠে সকল জমিতে আমি ফলন দেখতে চাই। আমার বাগান পরির্দশন করে উৎসাহিত হয়ে অনেকেই আমার পথ অবলম্বন করেছেন। সকলের অংশ গ্রহণে কৃষি ক্ষেত্রে দেশ আরো সমৃদ্ধশালী হবে এটাই প্রত্যাশা নিয়েই আমার এগিয়ে চলা।  

এ বিষয়ে কথা হলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্যান তথ্য বিভাগের প্রধান ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ক্যাপসিকাম একটি উচ্চ মানের সবজি। এর পুষ্টিগুণ অনেক। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সিলেট বিভাগে উচ্চ মানের সকল সবজি ছড়িয়ে দিতে আমাদের কাজ চলছে। বেলাল ইতোমধ্যে ক্যাপসিকাম চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন।           
 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫/ রশিদা

সর্বশেষ খবর