মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

মধ্যপাড়া পাথর খনি, উন্নয়নের হাতছানি

মধ্যপাড়া পাথর খনি, উন্নয়নের হাতছানি

মধ্যপাড়া পাথর খনি প্রায় ৮ বছর পর লোকসান কাটিয়ে এখন লাভের পথে। দেশের একমাত্র দিনাজপুরের তথা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন করেছে।
কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উন্নয়নের হাতছানি দিচ্ছে মধ্যপাড়া পাথর খনি। আবিষ্কৃত এবং উত্তোলিত খনিজ সম্পদ জেলার অর্থনীতিসহ দেশের অর্থনীতিতে এখন আর্শীবাদ হিসাবে দেখা দিয়েছে জেলার দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি।

বর্তমানে খনিতে তিন শিফটে প্রতিদিন পাথর উত্তোলন হচ্ছে প্রায় ৪ হাজার মেট্টিক টন। সড়ক ও রেলপথে বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মেট্রিক টন। বিভিন্ন সাইজের বিক্রিযোগ্য পাথরের বর্তমান মজুদ রয়েছে প্রায় ৪ লাখ মেট্রিক টন।

পদ্মাসেতুসহ সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে মধ্যপাড়ার পাথরের ব্যবহার বাড়ানো গেলে খনিটি লাভজনক হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এবং বিপুল পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বলে খনির এমডি মনে করেন।

মধ্যপাড়া পাথর খনি সূত্রে জানা যায়, দেশের একমাত্র পাথর খনি এই মধ্যপাড়া গ্রানাইট  মাইন। ১৯৭৩-১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়া এলাকায় ১.২ বর্গ কিলোমিটার (ভূ-গর্ভস্থ) এলাকায় ১২৮ মিটার গভীরতায় কঠিন শিলা আবিষ্কার করে। ১৯৭৬-৭৭ সালে কানাডার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মেসার্স এনএসসি কর্তৃক কারিগরী সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা পূর্বক মধ্যপাড়ায় একটি ভূ-গর্ভস্থ খনি বাস্তবায়ন কারিগরী দিক দিয়ে সম্ভব ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভজনক বলে সুপারিশ করে। দেশে বছরে প্রায় ৬০-৬৫ লাখ মেট্রিক টন পাথরের চাহিদাকে সামনে রেখে প্রতিদিন ৫ হাজার ৫শ' মেট্রিক টন হারে বছরে সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের লক্ষ্যে গত ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরিয়ার মেসার্স কোরিয়া সাউথ কো-অপারেশন কর্পোরেশন (নাম নাম)-এর সঙ্গে খনি উন্নয়নের চুক্তি করে সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অধীন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এতে ৩ দফা প্রজেক্ট প্রফাইল (পিপি) সংশোধন করার পর সংশোধিত পিপি অনুয়ায়ী মোট প্রকল্প ব্যায় ধরা হয় ১৯৭.৮৯৯ মিলিয়ন ডলার। এখানে শিলা রয়েছে গ্রানাইট, গ্রানোডায়োরাইট, নাইস, ইত্যাদি। অধিকাংশ পাথর কালো, কিছু গোলাপী, সাদা ও অন্যান্য। খনির আয়ুষ্কাল ধরা হয় ৭০ বছর।

পাথর উত্তোলন, মজুদ এবং বিক্রি নিয়ে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী আবুল বাসার জানান, মধ্যপাড়া পাথর খনিতে গত দুই মাসে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবং জ্বালানি সচিবের আগমণে খনি কর্তৃপক্ষ পাথর খনির উন্নয়নে আশার আলো দেখছেন।

তিনি জানান, বর্তমানে খনিতে তিন শিফটে প্রতিদিন পাথর উত্তোলন হচ্ছে প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন। সড়ক ও রেলপথে বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মেট্রিক টন। বিভিন্ন সাইজের বিক্রিযোগ্য পাথরের বর্তমান মজুদ রয়েছে প্রায় ৪ লাখ মেট্রিক টন। উত্তোলনের তুলনায় বিক্রি হচ্ছে কম। ফলে খনিতে পাথরের মজুদ বাড়ছে।

পদ্মাসেতুসহ সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে মধ্যপাড়ার পাথরের ব্যবহার বাড়ানো গেলে খনিটি লাভজনক হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এবং বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বলে তিনি মনে করেন।
 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২১ এপ্রিল, ২০১৫/ রশিদা

সর্বশেষ খবর