বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

গাছের ডালে শোপিস

গাছের ডালে শোপিস

প্রতিভাধর মানুষ নিরঞ্জন ব্যানার্জি। চা শ্রমিক হয়েও তিনি রপ্ত করেছেন গাছের ডাল দিয়ে বিভিন্ন জীবজন্তুর শোপিস বানানোর কৌশল। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালিঘাট ইউনিয়নের কাকিয়াছড়া চা বাগানের শ্রমিক কলোনির বাসিন্দা তিনি।

খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, সকাল ৮টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বাগানে কাজ করে বিকালে বাসায় এসেই তিনি শোপিস বানানোর কাজ শুরু করেন। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বলে সন্ধ্যার আগেই কাজ শেষ করেন। এভাবে প্রতিদিন একটু একটু করে গাছের ডাল দিয়ে নিখুঁতভাবে অজগর, কুমির, বানর, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, হরিণ, বনবিড়াল, ময়ূর, মোরগ, হাঁসসহ বিভিন্ন জাতের পাখি তৈরি করেন। দৃষ্টিনন্দন এসব শোপিস বিক্রি করে তার প্রতি সপ্তাহে আয় হচ্ছে দুই থেকে তিন হাজার টাকা। ঢাকা-সিলেট থেকেও ক্রেতারা এসে তার বানানো শোপিস কিনে নিচ্ছেন। পর্যটন মৌসুমে পর্যটকরাও তার বাসা থেকে এগুলো কেনেন। ওই মৌসুমে তার বিক্রি বেড়ে যায়, আয়ও বেশি হয়। এক বিকালে নিরঞ্জনের বাসায় গিয়ে দেখা যায় ঘরের বারান্দায় বসে আপন মনে গাছের ডাল দিয়ে একটি কুমির বানাচ্ছেন। পাশেই পড়ে থাকা গাছের ডাল দেখিয়ে বলেন, এটা দিয়ে বানর বানাবেন, ওটা দিয়ে টিয়াপাখি, আরেকটি দিয়ে অজগর সাপ তৈরি করবেন। কথা প্রসঙ্গে নিরঞ্জন বলেন, ১৫ বছর আগে চা বাগানের নিয়মিত শ্রমিক ছিলেন। শীতকালে চা বাগানে পুরনো চায়ের গাছ তুলে নতুন চা গাছ রোপণ করা হয়। একদিন কাজের ফাঁকে শখের বশে তিনি চা গাছের ডাল দিয়ে একটি টিয়াপাখি বানিয়ে ফেলেন। এ শখ পরে নেশায় পরিণত হয়। আর তখন থেকেই তার গাছের ডাল দিয়ে পাখি-জীবজন্তু বানানোর পেশা শুরু। এখন বাণিজ্যিকভাবে এসব বানাচ্ছেন।

তিনি বলেন, শুধু চা গাছ নয়, যে কোনো গাছের ডাল দিয়ে তিনি জীবজন্তু বানাতে পারেন। ডাল দেখেই বলে দিতে পারেন, কোন ডাল দিয়ে কী বানানো যাবে!

 

 

সর্বশেষ খবর