৭ নভেম্বর, ২০১৫ ১৪:৫০

পদ্মাসেতু দুর্নীতি মামলায় বিশ্বব্যাংকের আপিল আবেদনের শুনানি সম্পন্ন

কানাডা প্রতিনিধি

পদ্মাসেতু দুর্নীতি মামলায় বিশ্বব্যাংকের আপিল আবেদনের শুনানি সম্পন্ন

বহুল আলোচিত পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলায় বিশ্বব্যংকের দায়ের করা আপিলের শুনানি শুক্রবার অটোয়ায় সুপ্রিম কোর্টে সম্পন্ন হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতে দিনব্যাপী শুনিনি হলেও কোনো রায় ঘোষণা করা হয়নি।

সুপ্রিম কোর্টের একজন মুখপাত্র টেলিফোনে এই প্রতিনিধিকে জানান, বিশ্বব্যংকের আপিলের শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। আদালত সকল পক্ষের যুক্তিতর্ক বিশ্লেষণ করে লিখিতভাবে রায় প্রকাশ করবেন। তবে কতোদিনের মধ্যে এই রায় প্রকাশ হবে তিনি জানাতে পারেননি। শুনানির বিস্তারিত মিডিয়ায় প্রকাশের ব্যাপারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিস্তারিত তথ্য জানাতে তিনি অপরগতা প্রকাশ করেন। 

তবে আদালতের নথিপত্র থেকে জানা যায়, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালসহ  সাতটি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই মামলায় পক্ষ হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে তাদের আইনজীবীরাও শুনানিতে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।

মামলায় পক্ষ হওয়া আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), ইউরোপীয়ান ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গ্রুপ, ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং নরডিক ইনভেষ্টমেন্ট ব্যাংক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল । মামলার বাদী বিবাদী ছাড়াও কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে একটি বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়। 

প্রসঙ্গত, অন্টারিওর সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিস পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে পাওয়া নথিপত্র কোন সূত্র থেকে পেয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিশ্বব্যাংক ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে।

শুনানির জন্য তৈরি করা সুপ্রিম কোর্ট অব কানাডার ‘মামলার সংক্ষিপ্তসার’ থেকে জানা যায়, বিশ্বব্যাংক তার আপিল আবেদনে কানাডার বাসিন্দা নয়, এমনকি মামলার কোনো পক্ষও নয়- এমন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে তাদের নিজস্ব গোপনীয় কোনো দলিল আদালতে উপস্থাপনে বাধ্য করতে পারে কি না সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছে।

কানাডার সুপ্রিম কোর্টের সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের আপিলের সূত্র ধরে সুপ্রিমকোর্ট সকল পক্ষের কাছ থেকে এই ব্যাপারে দফায় দফায় লিখিত মতামত নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, কানাডার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনকে পদ্মাসেতু প্রকল্পের কিছু কাজ পাইয়ে দিতে বাংলাদেশ সরকারের উর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার যড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের অনুরোধে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) বিস্তারিত তদন্ত করে এবং এসএনসি লাভালিনের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হলে বাংলাদেশি কানাডিয়ান ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূইয়ার আইনজীবী বিশ্বব্যাংকের কাছে থাকা প্রমাণ আদালতে উপস্থাপনের আবেদন জানান। ‘আন্তর্জাতিক আইনে বিশ্বব্যাংককে যে কোনো ধরনের আইনি প্রক্রিয়া থেকে দায়মুক্তি দিয়েছে’ বলে যুক্তি তুলে বিশ্বব্যাংক অন্টারিওর আদালতে হাজির হতে অস্বীকার করে। পরে আদালত  যেই সূত্র থেকে বিশ্বব্যংক অভিযোগ পেয়েছে- সেই সুত্রের সাথে ইমেইল ও অন্যান্য যোগাযোগের নথিপত্র  জমা দিতে নির্দেশ দেন।

 

বিডি-প্রতিদিন/ ০৭ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর