২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ১২:০৯

আমিরাতের সাত লাখ প্রবাসীর এমআরপি গ্রহণ

শেষ হলো আইসিএও'র বেঁধে দেয়া সময়

কামরুল হাসান জনি, ইউএই

আমিরাতের সাত লাখ প্রবাসীর এমআরপি গ্রহণ

প্রবাসে অবস্থানরত ও বিদেশে গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) করার জন্যে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সময় সীমা শেষ হলো আজ মঙ্গলবার। আইসিএও এর বিধান অনুযায়ী দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ২৪ নভেম্বরের পর হাতে লেখা পাসপোর্টে গ্রহণযোগ্য হবে না, এমন ঘোষণা ইতোপূর্বে দেয়া হলেও নির্ধারিত সময় শেষে এখনো এমআরপি করার বাকি রয়ে গেছেন অনেকে। যারা নির্ধারিত সময়েও এমআরপি'র করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা দেশ ভ্রমণসহ ভিসা নবায়নে পড়তে হবে নানা ঝামেলায়। 

এদিকে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সবার হাতে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) পৌঁছাতে না পারায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হাতে লেখা পাসপোর্ট নিতে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থাকে (আইসিএও) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে এমআরপি পাসপোর্টের কাজ শুরু হয় ২০১০-১১ সালে। ইতোমধ্যে আবুধাবী দূতাবাস তিন লাখ ও দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট চার লাখ এমআরপি পাসপোর্ট করতে সক্ষম হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, আমিরাতে ৮ লাখ এমআরপির বিপরীতে প্রায় ৭ লাখ দেওয়া হয়েছে। কনস্যুলেট কর্মকর্তাদের দাবি, এখন সর্বোচ্চ ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার আমিরাত প্রবাসী হাতে লেখা পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন। 

এমআরপির দায়িত্বে থাকা দুবাই কনস্যুলেটের ভাইস কনসাল কিরীটি চাকমা বলেন, ‘আমরা প্রবাসীদের দ্রুত এমআরপি সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করছি। কাজের চাপ অনুযায়ী ধারণা করছি, এখন আর ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার প্রবাসী এমআরপি করার বাকি রয়েছে। তারা আসলেই আমরা সেবা প্রদান করছি। যেহেতু এমআরপি পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক এবং একটা করাও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই যথা সময়ে প্রবাসীদের এমআরপি করে নেয়া জরুরি।’    

দুবাই কনস্যুলেটেরে প্রথম সচিব (শ্রম) একেএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘দূতাবাস ও কনস্যুলেটে প্রতিদিন আটশ থেকে একহাজার প্রবাসী এমআরপি'র সেবা নিচ্ছেন। আশা করছি, দুই-এক মাসের মধ্যেই সকল প্রবাসীর হাতে এমআরপি পাসপোর্ট পৌঁছে যাবে।’

দুটো সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আউটসোর্সিং কোম্পানির মাধ্যমে এমআরপি গ্রহণের সুবিধা নিচ্ছে প্রবাসীরা এমনটি উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘মালেশিয়া, আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে প্রবাসীদের সংখ্যা বেশি থাকায় সরকারি ভাবেই কিছু আউটসোর্সিং কোম্পানিকেও এমআরপি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমিরাতের আবুধাবী, আল আইন, দুবাইয়ের আল কুজ, শারজাহ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া ও রাস আল খাইমাতে আইরিশ ও জিটিআর এর মত আউটসোর্সিং কোম্পানি সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’  

এমআরপি প্রসঙ্গে আমিরাতের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান সম্প্রতি প্রবাসীদের সর্তক করে বলেছেন, ‘এমআরপি পাসপোর্ট নবায়ন যোগ্য নয়, সেহেতু মেয়াদ শেষ হবার অন্তত ছয় মাস আগে নতুন পাসপোর্টের জন্য আপনারা আবেদন করবেন। এতে করে আমরাও যথা সময়ে সেবা দিতে পারবো।’  

এদিকে, আউটসোর্সিং কোম্পানির সেবার মান সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল প্রবাসীদের নিত্য ভোগান্তির কথা। ভুক্তভোগী প্রবাসীরা দাবি করছেন, আউটসোর্সিং কোম্পানি জিটিআর এর অধিনে এমআরপি পাসপোর্টের জন্যে আবেদনকারীরা পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। জিটিআর কোম্পানির দেয়া নির্ধারিত তারিখের ২-৩ মাস পরেও মিলছে না এমআরপি পাসপোর্ট। কর্মজীবি প্রবাসীরা কর্মস্থল থেকে বার বার ছুটি নিয়ে জিটিআর এর অফিসে গিয়েও পাচ্ছেনা কোনো সুফল। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে জিটিআর এর আবুধাবীতে দায়িত্বরত মোহাম্মদ মনসুরের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, ‘জিটিআর এর সিস্টেম কিছুদিন নষ্ট ছিল। তাই, এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তবে আটকা পড়া সেসব পাসপোর্ট আমরা আগামীমাসে  ডেলিভারি দিতে পারবো।’


বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর