২৯ নভেম্বর, ২০১৫ ১৭:০০

দুবাই প্যারেডে লাল-সবুজের বাংলাদেশ

কামরুল হাসান জনি, ইউএই:

দুবাই প্যারেডে লাল-সবুজের বাংলাদেশ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত প্যারেডে টানা দ্বিতীয়বারের মতো লাল-সবুজের পতাকা হাতে অংশ নিল বাংলাদেশ। শনিবার দুবাইয়ের শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতুম বুলেভার্ডস্থ ডাউন টাউনে ‘হোম অব দি ওয়ার্ল্ড’ থিমে অনুষ্ঠিত হল ৪৪তম এ প্যারেড। 

প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন দুবাই পুলিশ, অশ্বচালক দল, চিকিৎসক, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা মহাদেশের প্রায় ৪৫০০ প্রবাসী। বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব দুবাইয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মূলত প্যারেডে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। 

দুই শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে বর্ণিল সাজসজ্জায় টিম বাংলাদেশ ছিল ছয়টি উপদলে বিভক্ত। পতাকাবাহী দল, বাউল ও বৈষ্ণব দল, বৈশাখী উৎসবের দল, বসন্ত উৎসবের দল, ঘুড়িবাহী দল ও টিম টাইগার নামে ছয়টি আলাদা উপদলের নেতৃত্ব দেন জুলফিকার হায়দার খান, মামুন রেজা, জাহাঙ্গীর আলম রুপু, আরিফ আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও মুর্তাজা তানবীর আহমেদ। 

পতাকাবাহী দলের সদস্যরা দুই দেশের পতাকা হাতে স্মরণ করিয়ে দিলেন আমিরাত ও বাংলাদেশের ৪৪ বছরের বন্ধুত্বের কথা। বৈশাখ উৎসব, বসন্ত ও ঘুড়ি উৎসবের দলগুলোতে বাংলার রূপ যেন ছুঁই ছুঁই করতে থাকে নারী সদস্যের পোশাক ও সাজসজ্জার এক ঝলকানিতে। বাউল দলটি শুধু বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ফোক গানকেই নয়, পাশাপাশি নিখুঁতভাবে উপস্থাপন করেছেন বাউল শিল্পীদের বেশভুষাও। ক্ষণে ক্ষণে সংগীতের তালে মেতে থাকা বাউল দলের ক্ষুদে সদস্যদের এসময় হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেছে হাজারও উপস্থিত দর্শকদের। 

বাংলাদেশ দলের প্রধান আকর্ষণ ছিলে টিম টাইগার। যেহেতু ক্রিকেটে বাংলাদেশের জয় জয়কার। তাই প্যারেডে বাংলাদেশের টিম পরিচালকরা ক্রিকেটকেই উপস্থাপন করেন প্রধান আকর্ষণ হিসেবে। ৫০ ফিটের বিশাল আকৃতির ব্যাট ও লাল রংয়ের বড় বলটি এমন কেউ নেই, যার নজরে পড়েনি। শুধু কি তাই! বিশাল আকৃতির ব্যাট ও রয়েল বেঙ্গল টাইগার হাতে লাল-সবুজের জার্সি পরিহিত তরুণদের রীতিমত দেখা গেলো আমিরাতের বিভিন্ন চ্যানেলের সরাসরি সম্প্রচারে। এমনকি এমবিসি ও সিএনএন-এর মতো আন্তর্জাতিক টিভি ক্যামেরারও নজরে ছিল টিম টাইগার নামের এই উপদলটি। তারুণের ঝলকানিতে ভরপুর এ দলটি উপস্থাপন করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের উদীয়মান শক্তি বাংলাদেশকে। এসময় ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ’, ‘টাইগার-টাইগার’ স্লোগানের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হতে থাকে সু-উচ্চ ইমারত বুর্জ খলিফার আশপাশের বড় বড় দালানগুলোতে। হাজার হাজার দর্শকদেরও মুখে প্রশংসার বাণী কর্ণপাত হয় টিম বাংলাদেশের। 

আপন সংস্কৃতিকে বিশেদের মাটিতে প্রকাশ করার এটাই যেন ছিলো সুর্বণ সুযোগ। সে সুযোগ লুফে নিয়ে নিজেদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতিকে আরো একবার বিদেশিদের কাছে তুলে ধরল বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব দুবাইয়ের সভাপতি নওশের আলীর তত্ত্বাবধানে অনুশীলন পর্বসহ প্যারেডের নেতৃত্ব দেন জুলফিকার হায়দার খান ও এনআরবি কেয়ার ফর গালফের পরিচালক রফিকুল্লাহ গাজ্জালি। এছাড়াও বাংলাদেশ দলের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ক্যাপ্টেন সৈয়দ আবু আহাদ, এটিএম জাহেদ চৌধুরী, ইমাম হোসেন পারভেজ, আফতাব মনির প্রমুখ। 

বাংলাদেশ টিমের সঙ্গে প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাইয়ের কাউন্সিলর কনসাল ড. তানভীর মনসুর ও প্রথম সচিব (শ্রম) এ কে এম মিজানুর রহমান। 

উল্লেখ্য, উক্ত প্যারেডে বাংলাদেশের পাশাপাশি আমেরিকান কাউ বয়েজ, সৌদি আরবের সুসজ্জিত কুচকাওয়াজ দল, আইরিশদের ড্যান্সার, চীনাদের ড্রাগন নৃত্য, ভারতীয়দের কথাকলি ও নৃত্য, মোটর আরহী ও ব্যয় বহুল কার শো সহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা নাচ ও অভিনয় দিয়ে প্যারেডে আপন সংস্কৃতি তুলে ধরার চেষ্টা করেন।


বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর