মার্কিন কংগ্রেসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ও কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের মেম্বার কংগ্রেসওম্যান (ডেমক্র্যাট-নিউইয়র্ক) গ্রেস মেং বলেছেন, ''বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বার্থেই জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল হওয়া উচিত এবং আমরা এ নিয়ে গত সপ্তাহেও ক্যাপিটল হিলে বৈঠক করেছি। সে বৈঠকে কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ার কংগ্রেসম্যান (ডেমক্র্যাট-নিউইয়র্ক) যোসেফ ক্রাউলীও ছিলেন।''
'বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবন-মানের উন্নয়নের স্বার্থে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালের জন্যে নির্ধারিত শর্তগুলো পূরণ হওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করে গ্রেস মেং। তিনি আরো উল্লেখ করেন, ''রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়নি।''
বাংলাদেশি-আমেরিকান ডেমক্র্যাটিক লীগের প্রেসিডেন্ট খোরশেদ খন্দকারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ১৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউইয়র্কে কংগ্রেসওম্যানের ডিস্ট্রিক্ট অফিসে গ্রেস মেং-এর সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। শুরুতেই অবিলম্বে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালের জন্যে কংগ্রেসওম্যানের সর্বাত্মক সহায়তার অনুরোধ সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন খোরশেদ খন্দকার। বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিরাপদ করার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন যে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছিল তা সম্পন্ন হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় স্মারকলিপিতে। স্মারকলিপিতে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন-অগ্রগতির ওপরে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করে তা অব্যাহত রাখতে মার্কিন কংগ্রেসের সমর্থন প্রত্যাশা করা হয়। কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে নিরন্তরভাবে সচেষ্ট থাকার জন্যে গ্রেস মেংকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানানো হয় এ সময়।
বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য এনআরবি নিউজকে জানানোর সময় প্রতিনিধি দলের নেতা খোরশেদ খন্দকার উল্লেখ করেন, সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির অভিপ্রায়ে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ করছেন। সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কংগ্রেসওম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেস মেং সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, ''সেটি সত্য নয়। রাজনৈতিক কারণে জিএসপি স্থগিতের প্রশ্নই উঠে না।''
এ সময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কংগ্রেসওম্যানকে অবহিত করেন যে, ''প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সন্ত্রাস দমনে বিশেষ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। আইএসআইএস'র অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই। সরকার এ ব্যাপারে সজাগ রয়েছে।'' কংগ্রেসওম্যানের আন্তরিক সহায়তা কামনা করে প্রতিনিধি দল তাকে বলেন, একাত্তরের ঘাতক হিসেবে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুই যুদ্ধাপরাধী যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে রয়েছে। তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে কংগ্রেসের ভূমিকার বিকল্প নেই। বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় চলমান উদ্যোগ ফলপ্রসূ করতে এসব কুখ্যাত ঘাতকদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত রায় কার্যকর করা জরুরি।
গভীর আগ্রহের সাথে বাংলাদেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি অবহিত হন গ্রেস মেং এবং বাংলাদেশের জন্যে কাজ করে যাবেন বলে প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস দেন।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, সহ-সভাপতি আবুল কাশেম এবং নির্বাহী সদস্য শাহানারা রহমান। এ সময় শেখ হাসিনা সম্পাদিত বঙ্গবন্ধুর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'র কপি প্রদান করা হয় কংগ্রেসওম্যানকে।
গ্রেস মেং-এর কম্যুনিকেশন ডাইরেক্টর গোল্ডেস জর্দানও ছিলেন বৈঠকে।
বিডি-প্রতিদিন/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ