১৫ মে, ২০১৬ ০৯:২৪

বিশ্বে ২ ট্রিলিয়ন ডলার প্রকল্পে ঘুষ-দুর্নীতি: আইএমএফ

নিউইয়র্ক থেকে এনআরবি নিউজ :

বিশ্বে  ২ ট্রিলিয়ন ডলার প্রকল্পে ঘুষ-দুর্নীতি: আইএমএফ

বার্ষিক কমপক্ষে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন প্রকল্পে ঘুষ-দুর্নীতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন ল্যাগার্ডে । গত ১২ মে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত ‘দুর্নীতি বিরোধী সম্মেলন’ ত্রিস্টিন আরো বলেন, ঘুষের এ পরিমাণ হচ্ছে বিশ্বব্যাপী মোট অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ২%। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ঘুষের পরিমাণ সঠিকভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হলে অর্থের পরিমাণ আরো বাড়বে। সুদান, আফগানিস্তান এবং ভ্যানেজুয়েলার মত অনেক দেশে ঘুষ-দুর্নীতির মাত্রা ব্যাপক বলেও তিনি জানিয়েছেন। 


তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপারটি এখন ওপেন-সিক্রেট হলেও, পরোক্ষভাবে দুর্নীতির খেসারত অনেক বেশী এবং তা সকল কর্মকান্ডকে দুর্বল করে। প্রবৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলে অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে দেয় এবং আয়ে বিরাট ব্যবধান সৃষ্টি করছে’। প্রবৃদ্ধির হার হ্রাস পাওয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ে এবং শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের দুর্নীতির ঘটনাবলী  (ব্রাজিল, মোজাম্বিক এবং সর্বশেষ পানামা পেপার্স) সামাজিক অস্থিরতাকে চরমে নিয়ে যায়।

এদিকে এ নিয়ে গত ১২ মে এক সংবাদ প্রকাশ করেছে বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এমন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএফ স্টাফের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বাড়বে। দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিরাজিত রয়েছে এমন রাষ্ট্রে প্রকল্পের তহবিল বরাদ্দের প্রাক্কালে আইএমএফ কর্মকর্তাদেরকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।  

‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ আরো উল্লেখ করেছে, ‘কিছু রাষ্ট্রে দুর্নীতি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সে সব রাষ্ট্রকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্যে আইএমএফ ইতিমধ্যেই তার ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে। ইউক্রেইনের রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানী এবং দুর্নীতি দমন সংস্থার মাধ্যমে যারা নিজেদের দুর্নীতিবাজ নন বলে প্রমাণ করতে সক্ষম হবে, কেবলমাত্র তারাই পাবে আইএমএফ’র প্রকল্প অথবা অর্থ। 

গত বছর লাইবেরিয়ার জন্যে কোন অর্থ ছাড় দেয়া হয়নি ঐ একই কারণে। কিইভ’র ঋণ-প্রকল্প বিবলম্বিত হয়েছে। অতি সম্প্রতি মোজাম্বিকের জন্যে  ঋণ সহায়তার প্রকল্প  সাসপেন্ড হয়েছে। সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনার অংশ হিসেবে আইএমএফ চেষ্টা করছে সকল ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিতে, বাজেট-শীট এবং প্রচলিত রীতি অনুসরণ করাতে, যাতে দুর্নীতির প্রতি আসক্তি ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়। 

তবে তহবিল বন্টনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, জরুরী প্রয়োজনে ঋণ প্রদানকারীরা আরো বেশী সুফল দিতে পারবে। এ বছরের শেষে আইএমএফ আরো বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করবে যে, ঋণ প্রদানের শর্ত তৈরীর সময় সতর্কতা অবলম্বন করা সম্ভব হলেই দুর্নীতি হ্রাস করা সম্ভব হতে পারে। 

আইএমএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন ল্যাগার্ড আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, দুর্নীতি প্রতিরোধে আইএমএফ যে ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করতে যাচ্ছে তা বিবেচনার যোগ্য। একইসাথে বিকল্প হচ্ছে-সমস্যার গভীরে দৃষ্টি প্রসারিত করতে হবে, এটিও অন্যতম একটি পন্থা হতে পারে । এটিও বিশেষভাবে সত্য যে দুর্নীতির মূল কারণ অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন, এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তা বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে’

 

 

বিডি প্রতিদিন/ ১৫ মে, ২০১৬/ হিমেল-০৮

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর