১৯ জুলাই, ২০১৭ ১০:১২

এসডিজি বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে :

এসডিজি বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ

মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘হাই লেভেল পলিটিক্যাল ফোরাম’র জেনারেল ডিবেট অনুষ্ঠিত হয়। ইকোসকের উচ্চপর্যায়ের এই ডিবেটের মূল বিষয় ছিল টেকসই উন্নয়ন। বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল এলডিসির দেশসমূহের পক্ষে এই ডিবেটে বক্তৃতা প্রদান করেন। 

এসময় স্বল্পোন্নত দেশসমূহের সরকারগুলো দারিদ্র্য নির্মূলে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “দারিদ্র্য নির্মূলের এই এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এলডিসি’র দেশসমূহ জাতীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় আইনী, প্রশাসনিক ও কাঠামোগত সংস্কার সাধন করছে। আমরা সকল জনগণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত, নারীর ক্ষমতায়ন, মানসম্মত শিক্ষা, তথ্য ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, আইনের শাসন ও বেসরকারি খাতের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরির উপর জোর দিয়েছি”। 

তিনি আরও বলেন, “এ সকল পদক্ষেপ সত্ত্বেও এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তার বিরাট ঘাটতি আমাদের প্রচেষ্টাকে প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত করছে। তাই, উদার আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এলডিসি এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য সম্পদের যথাযথ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান রাখছি”। 

উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যেন স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে আর্থিক, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমান, টেকসই এবং সময়োপযোগী সহযোগিতা প্রদান করে।

মন্ত্রী জানান, দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশসমূহ অনেক পিছিয়ে রয়েছে এবং এখনও এর ৪৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে।

এলডিসি’র দেশগুলোতে ওডিএ, এফডিআই এবং বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে উল্লেখ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিশ্রুতিসমূহ পূরণের জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি জোরালো আহ্বান জানান।

প্রযুক্তির সহজলভ্যতা ও এর ব্যবহার এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে উল্লেখ করে মন্ত্রী সদ্য গঠিত টেকনোলজি ব্যাংকের পূর্ণ কার্যক্রমের উপর জোর দেন।

এলডিসি’র দেশগুলোতে এসডিজির অভিষ্ট ও লক্ষ্যসমূহের পূর্ণ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে মর্মেও মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী, এইচএলপিএফ-এর এবারের প্রতিপাদ্য, “দারিদ্র্য নিমূল এবং পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা” - কে অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে উল্লেখ করেন। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের উপর বিরূপ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়টি সুরাহার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন। 

পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল এইচএলপিএফ-এ অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জেনারেল ডিবেটে অংশগ্রহণ ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল আজ জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত আরও বেশ কয়েকটি এসডিজি বিষয়ক সাইড ইভেন্টে অংশ নেয়। 

দিনব্যাপী এসকল কর্মসূচিতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, পরিকল্পনা কমিশনের জেনারেল ইকোনোমিকস ডিভিশনের সদস্য শামসুল আলম ও পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জিআইইউ এর মহাপরিচালক আব্দুল হালিম উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এলডিসির দেশসমূহের বৈশ্বিক সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছে।


বিডি প্রতিদিন/১৯ জুলাই ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর