৯ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১২:০৬

জাতিসংঘে একাত্তরের গণহত্যার কথা তুলে ধরলেন রাষ্ট্রদূত মোমেন

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে :

জাতিসংঘে একাত্তরের গণহত্যার কথা তুলে ধরলেন রাষ্ট্রদূত মোমেন

একাত্তরে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার লোমহর্ষক ঘটনাবলি উপস্থাপন করলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘গণহত্যা কনভেনশনের ৬৯তম বার্ষিকী’ এবং ‘গণহত্যার শিকার মানুষ ও তাঁদের মর্যাদার স্মরণে এবং এই অপরাধ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষ্যে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা তুলে ধরেন।

আবেগপ্রবণ হলেও অত্যন্ত মর্মস্পর্শীভাবে এ বিশ্বসভায় রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “সাম্প্রতিক অতীতে ঘটে যাওয়া গণহত্যার ঘটনাগুলো বিস্মৃত হওয়ার আগেই তা সম্মিলিতভাবে আমাদের পুনরুদ্ধার করতে হবে। আমরা এর মর্মবেদনা বুঝতে পারি, কেননা আমরা নিজেরাই নিষ্ঠুরতম গণহত্যার শিকার হয়েছিলাম ১৯৭১ সালে”। 

দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর বাণীর অংশবিশেষ -“ধর্ম, জাতি ও রাজনৈতিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে মানুষকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল দেশের বুদ্ধিজীবীদেরকে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সম্প্রতি ১৯৭১ সালের গণহত্যার শিকার মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে” - উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন “এর থেকেই বোঝা যায়, গণহত্যার বিষয়টিকে আমরা হৃদয়ে কত গভীরভাবে ধারণ করি”। 

‘জেনোসাইড কনভেনশন’ এবং ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধি’র সার্বজনীনকরণে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সমর্থনের পুনর্ব্যক্ত করেন।

এসময় গণহত্যা প্রতিরোধের জন্য পূর্বাভাসসমূহ চিহ্নিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে উপর্যুপরি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও চরম সহিংস অপরাধসমূহের ক্ষেত্রে গণহত্যার আলামত উপস্থিত থাকার বিষয়টি আমলে নেয়া যায় কি না সে ব্যাপারে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সাম্প্রতিক বক্তব্যের কথা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘এ সকল প্রশ্নের সুরাহা করার সময় এসেছে।’ 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাতিসংঘের আইন সম্পর্কিত ও আইন কাউন্সিল এর দায়িত্বে নিয়োজিত আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিগুয়েল ডি শেপরা সোয়ারেজ।

শেপরা সোয়ারেজ জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতিনিধিত্ব করেন। অনুষ্ঠানের কী-নোট স্পিকার ছিলেন জাতিসংঘের গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা এ্যাডাম ডায়িং। বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রেসিডেন্ট সিলভিয়া ফার্নানদেজ ডি গুরম্যান্ডি, আরমেনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি জোহরাব মনাটসসানিয়ান, বেনিনের স্থায়ী প্রতিনিধি জিন-ক্লাউডি পেলিক্স দো রিগো। 

তাঁরা গণহত্যা কনভেশনের উন্নয়ন, বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও অনুস্বাক্ষরকারী দেশসমূহের দায়বদ্ধতার বিষয়সমূহের উপর আলোকপাত করেন।

এ সভায় বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাজ্য, লাটভিয়া, তুরস্ক, ম্যাক্সিকো, আজারবাইজান ও সুদান এর প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন। বক্তাগণ এই ঘৃণ্য গণহত্যা অপরাধকে প্রতিরোধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান।

বিডি-প্রতিদিন/০৯ ডিসেম্বর, ২০১৭/মাহবুব

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর