২৬ এপ্রিল, ২০১৮ ১২:১৬

জাতিসংঘে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক

জাতিসংঘে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস

জাতিসংঘের চলতি ৭২তম সাধারণ অধিবেশনের সভাপতি মিরস্ল্যাভ লাজ্যাক বলেছেন, শান্তি বিনির্মাণে দাঙ্গাপূর্ণ অঞ্চলে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশি রক্ষীরা উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। গত ৩০ বছরে ১৪২ জন বাংলাদেশি প্রাণ দিয়েছেন শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। আহত হয়েছেন ২২৩ জন। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সে সব প্রাণ উৎসর্গকারী বাংলাদেশিকে।

বুধবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় সকল কর্মকর্তাসহ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের কূটনীতিকরা যোগ দেন। 

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি যখনই কোন মিশনে যাচ্ছি, তখনই উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের কথা বলি। বাংলাদেশের মহিলা পুলিশের দল সোচ্চার রয়েছেন সামাজিক-সম্প্রীতি সুসংহত করতে। আমি সকলকে অভিবাদন জানাচ্ছি।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, আমি এসেছিলাম বিশ্বব্যাংকের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্মেলনে। ফেরার পথে জাতিসংঘের টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনেও যোগদানের সুযোগ পেলাম। এরইমধ্যে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৩০ বছরের ভূমিকার প্রশংসা বাক্য শুনে অভিভূত হয়েছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক শান্তি আর সমৃদ্ধি ক্ষেত্রে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন। বিশ্ব শান্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।

স্বাগত বক্তব্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রুদূত মাসুদ বিন মোমের শান্তিরক্ষা মিশনের বাংলাদেশি কর্মকর্তাগণকেও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার কারণেই বাংলাদেশ প্রশংসিত হচ্ছে। 

১৯৮৮ সালে ইরাকের দাঙ্গা মেটাতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বপ্রথম অংশ নেয় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। সেই থেকে বিশ্বের ২৭টি মিশনের দায়িত্ব সম্পাদন করেছে। এখন তারা কাজ করছে ১১টি দেশে। বর্তমানে ৭ হাজার ৮০ জন রয়েছেন এসব মিশনে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য ৫ হাজার ৪৫৬, নৌবাহিনী ৩৪০, বিমান বাহিনী ৫০১ এবং পুলিশ বাহিনীর ৭৮৩ জন রয়েছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় বৃহত্তম শান্তিরক্ষী সরবরাহকারি রাষ্ট্রের মর্যাদায় রয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মহিলা সদস্যের সংখ্যা ১৫৭। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, সাইপ্রাস, কঙ্গো, হাইতি, লেবানন, লাইবেরিয়া, মালি, সাউথ সুদান এবং সুদানের মিশনে কাজ করছেন বাংলাদেশিরা। এরমধ্যে ফোর্স কমান্ডারসহ শীর্ষপদেও রয়েছেন কয়েকজন।

৩০ বছর পূর্তি উৎসবের স্লোগান ছিল উই আর কমিরেটড এ্যান্ড ইনভলব। এ উৎসবে জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর জামিল, এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়কারি আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. এ কে এ মোমেন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল শামীম আহসানসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ। 

বিডি প্রতিদিন/২৬ এপ্রিল, ২০১৮/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর