মালয়েশিয়ায় সরকারের পট পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন অভিযোগ তুলেছেন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশী ব্যবসায়ী কমিউনিটি। তারা বলছেন মালয়েশিয়ায় শ্রমিক প্রেরণের চলমান প্রক্রিয়া জি-টু-জি প্লাস পদ্ধতি একটি সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি এবং ঐ চক্র এতদিন মাত্রাতিরিক্ত টাকা নিয়েছে। এ চক্রের কাছে শুধু ব্যবসায়ী নয় কর্মীরাও ছিল জিম্মি।
গতকাল সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুরের জ্বালান ইম্বির রসনা বিলাস রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ ব্যবসায়ী কমিউনিটির উদ্যোগে চলমান জি-টু-জি প্লাস পদ্ধতির আওতায় জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে এক মত বিনিময় সভার এসব অভিযোগ তোলা হয়। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা আলহাজ্ব মকবুল হোসেন মুকুলের সভাপতিত্বে ও ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান বাদলের সঞ্চালনায় জনাকীর্ণ এই সভায় দল মত নির্বিশেষে কমিউনিটির অনেক ব্যবসায়ী উপস্থিত থেকে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, ৩৭ হাজার টাকায় মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেট অসহায় শ্রমিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি প্রায় ৩ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে। ১০ কোম্পানির এই সিন্ডিকেট কতৃক হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ফলে বর্তমানে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানি বিরাট এক হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, অন্যান্য শ্রমিক রপ্তানিকারকদের পাশ কাটিয়ে এই প্রক্রিয়ায় শ্রমিক রপ্তানি করার ফলে শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত ভীষণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বিভিন্ন ইস্যু দেখিয়ে এই সিন্ডিকেট অসহায় শ্রমিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে মেডিকেল অনলাইন করতে ৬০০০ টাকা, পাসপোর্ট ফেরত নিতে গেলে ৬০০০ টাকা, ফ্লাইটের সময় কন্ট্রাক ফরম সাইনের জন্য ৪০০০ টাকা জোর পূর্বক আদায় করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কেউ কোন প্রতিবাদ করতে পারছে না।
বক্তারাই বলেন, যেহেতু মালয়েশিয়ায় নতুন সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে এবং এই সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে সেহেতু আমরা আশা রাখি জনৈক আমিন গং কর্তৃক ধার্যকৃত এবং ১০ কোম্পানির সিন্ডিকেট কর্তৃক আদায়কৃত ৫০০০ রিঙ্গিত আর কাউকে পরিশোধ করতে হবে না। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সকল বঞ্চিত জনশক্তি রপ্তানিকারকদের এগিয়ে আসারও উদাত্ত আহবান জানান তারা।
মত বিনিময় সভা শেষে উপস্থিত সকলের মতামত নিয়ে ৫ টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এগুলো হল- (১) আমিন গং এর ১০ কোম্পানির সিন্ডিকেটকে প্রসেসিং খরচ বাবদ ৫০০০ রিঙ্গিত প্রদান করা হবে না। (২) খুব শিগগিরই কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাই কমিশনে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। (৩) মাইগ্রেশন খরচ কমাতে হবে। (৪) সকলেই মালয়েশিয়ার আইন মেনে চলবে। (৫) নতুন কোন সিন্ডিকেট মেনে নেয়া হবে না।
সভায় কুয়ালালামপুরে অবস্থানরত বাংলাদেশ কমিউনিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মো. শহিদুল ইসলাম বাবুল, তৌহিদ চৌধুরী, আলমগির হোসেন, আব্দুল জলিল লিটন, মোতালেব জনি, রুহুল আমিন, এস, এম নিপু, রাশেদ বাদল, শফিকুল ইসলাম পলাশ, শাখাওয়াত হোসেন জোসেফ, মানসুর আল বাসার সোহেল, শেখ জহির, মো. ফরিদ উদ্দিন গাজী প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/২২ মে ২০১৮/হিমেল