২১ জুলাই, ২০১৮ ১০:৪৯

'লেনদেনের প্রশ্নে নাগরিক সমাজের অনেকেই বিক্রি হয়ে গেছেন'

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে :

'লেনদেনের প্রশ্নে নাগরিক সমাজের অনেকেই বিক্রি হয়ে গেছেন'

সুজনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘নাগরিক সমাজের বর্তমান দুরবস্থার জন্যে নাগরিক সমাজই দায়ী। নিজেদেরকেও আয়নার সামনে দাঁড়ানো উচিত। আরেকটি যে জিনিস নাগরিক সমাজকে ধ্বংস করেছে, আমাদের দুই নেত্রী (শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া) কিন্তু একটি কাজ শুরু করেছিল ১৯৯১ সালের পর থেকে, আমি নিশ্চিত তারা শলাপরামর্শ করেনি, ফায়দা দেয়া রাজনীতি, ফায়দাতন্ত্র, পেট্রনাইজ সিস্টেম। আপনি যদি ক্ষমতায় থাকেন, অর্থাৎ ক্ষমতাসীনদের সাথে থাকলে, তাদের সাথে সুর মেলালে, তাদের দলে থাকলে আপনি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

আর যদি আপনি তা না করেন, তাহলে আপনার যা প্রাপ্য, ন্যায্য অধিকার, তা থেকেও বঞ্চিত হবেন। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও হিউম্যান বিইং, সে অনুযায়ী নাগরিক সমাজের লোকজনও লেনদেনের প্রশ্নে অনেকেই বিক্রি হয়ে গেছেন। এবং নাগরিক সমাজও এখন দলগতভাবে বিভক্ত। বিএনপির নাগরিক সমাজ এবং আওয়ামী লীগের নাগরিক সমাজ।

সহজভাবে বলা যায়, এখন কারোর সুদিন, আবার কারোর দুর্দিন। কেউ কেউ আবার সুদিনের জন্যে রং পরিবর্তন করে। অর্থাৎ বসন্তের কোকিল। আমরা হয়তো অতটা বুদ্ধিমান না। এজন্যে আমরা পারি নাই। জানি না কতদিন এমন পরিস্থিতির মধ্যেও নিজেদের সুপথে রাখতে সক্ষম হবো।’

২০ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে সাংবাদিক ও সুধীজনদের সাথে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়কালে সুশাসনের জন্যে নাগরিক তথা সুজনের সেক্রেটারি বদিউল আলম মজুমদার আরো বলেন, ‘১/১১কে গঠিত কেয়ারটেকার সরকার বিপুল সমর্থনে দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করেছেন।

এছাড়া, দায়িত্ব গ্রহণের আগে কোন কোন দলের অকুন্ঠ সমর্থন থাকলেও পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন হারিয়ে ফেলেছিল। দলগুলোও সোচ্চার হয়েছিল নির্বাচনের জন্যে।’
মজুমদার বলেন, ‘সরকার যদি সহায়তা না করে তাহলে কোন কমিশনই, তারা যত ন্যায়নিষ্ঠার সাথেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করুক না কেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষম হবে না।’
‘এজন্যে দরকার রাজনৈতিক সমঝোতা। নির্বাচনকালিন সরকারের ব্যাপারে জাতীয় ঐক্যমত গঠন এবং নির্বাচন যাতে সঠিকভাবে করা সম্ভব হয়, সে ধরনের বিধি তৈরী করা এবং সর্বোপরি কিছু বিষয় চিহ্নিত করে তা যথাযথভাবে সম্পাদনে জাতীয় সনদ রচনা করা। নির্বাচনের পর কোন ধরনের সংঘাত করবে না-এমন একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে সকল রাজনৈতিক দলকে। তাহলেই প্রত্যাশিত নির্বাচন উপহার দেয়া সম্ভব হবে’-উল্লেখ করেন মজুমদার।
এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নিম্ন পর্যায়ের বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে খান খান হয়েছে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগের পর দেশত্যাগের ঘটনাবলিতে অনেক কিছুও ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এমন অবস্থার উত্তর ঘটাতে সকলকে একযোগে কাজের বিকল্প নেই।’
সাংবাদিক মনির হায়দার এবং মনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নিউইয়র্কস্থ নজরুল একাডেমির সেক্রেটারি শাহ আলম দুলাল।
মতবিনিময়ে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন এম এ মালেক, শেলী জামান খান, রেজা রশীদ, ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ, মিনহাজ আহমেদ সাম্মু, সাংবাদিক মঞ্জুর আহমেদ, লাবলু আনসার, আকবর হায়দার কিরণ, তাসের খান মাহমুদ, হাসানুজ্জামান শাকি, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। 

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর