১০ নভেম্বর, ২০১৮ ০১:২২

লন্ডনে ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল মার্টে বাংলাদেশ ষ্টলের দৈন্যদশা

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি

লন্ডনে ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল মার্টে বাংলাদেশ ষ্টলের দৈন্যদশা

প্রতিবছর লন্ডনে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল মার্টে বাংলাদেশ অংশ নিলেও বরাবরের মতোই বাংলাদেশ ষ্টলের অবস্থা নাজুক। অব্যবস্থপনা আর অপ্রতুল ম্যাটেরিয়ালস নিয়ে এবারের মেলাতেও অংশ নিল বাংলাদেশ। 

লন্ডনের এক্সেল এক্সিবিশন সেন্টাওে গত ৫ থেকে ৭ নভেম্বর দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল মার্ট। নিজ নিজ দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের প্রতিনিধিরা এবারের মেলায় অংশ নেয়। বার্লিনের পর বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই মেলায় বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের প্রসারে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ড। 

এক্সেল এক্সিবিশন সেন্টারের এবারের মেলায় সবাই সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন নিজেদের দেশের কৃষ্টি, সৌন্দর্য এবং সভ্যতাকে তুলে ধরতে। নানান সাজে সাজিয়েছেন নিজেদের স্টল গুলো। পর্যটনের অসীম সম্ভাবনা যেসব দেশ বেশী উপলদ্ধি করছে তাদের আয়োজন তত বেশী মনমূগ্ধকর।

প্রতি বছরের মত এবারের মেলাতেও অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। টুরিজম বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় মেলায় অংশ নেয়া ১০টি টুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সুযোগ সুবিধা বুঝানোর চেষ্টা করছেন অতিথিদের। তবে দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং অতি সাধারণ উপস্থাপনায় কিছুটা হতাশ হয়েছেন তারা। মেলায় অংশ নেয়া বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটরসরা এজন্য দায়ী করেছেন কর্মকর্তাদের অবহেলাকে।

জার্নি প্লাস'র প্রধান নির্বাহী তৌফিকুর রহমান বলেন, এতো টাকা খরচ করে সরকার। আমরা প্রতিবছরই আসি এই মেলাতে। কিন্তু আশেপাশের নেপাল, মালয়শিয়া, ভারতের ষ্টল আর আমাদের স্টল রাত আর দিন পার্থক্য। তারা এতো সুন্দর করে ব্রান্ডিং করে সেটা দেখেও এতো বছরে পর্যটন কর্পোরেশন এইসব মেলাতে অংশ নেয়ার মতো তৈরি হতে পারেনি।

টুরিজম উইন্ডো এর প্রধান নির্বাহী মনিরুজ্জামান মাসুম বলেন, অন্যান্য দেশের ষ্টলে দর্শনার্থীদেও আকৃষ্ট করার কতো কিছু আছে। আমাদের ষ্টলে পর্যটন কর্পোরেশনের যেসব লিফলেট আছে তা এত নিম্নমানের যে সেটা দর্শনার্থীদেও সামনে দেখানোও লজ্জাজনক।

তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে ব্রান্ডিং করার ব্যপারে পর্যপ্ত বরাদ্ধ পাওয়া যাবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন টুরিজম বোর্ডের সদস্য খবির উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা ধীরে ধীরে উন্নতি করছি। ভবিষতে আরো উন্নত হবে। 

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মেলায় আগত ট্যুারিজম বোর্ডেও সিইও জাহাঙ্গীর হোসেনকে দুই দিন ভিজিট করেও পাওয়া যায়নি। যতোবারই ষ্টলে উনার খোজ করা হয়েছে ততোবারই তিনি মিটিংয়ে আছেন বলা হয়েছে। তবে কিসের মিটিং, কার সাথে মিটিং সে বিষয়ে কোন উত্তর কেউ দিতে পারেননি।

মেলায় আগত বাংলাদেশী তরুন জাবের আহমেদ বলেন, অন্যান্য দেশের ষ্টলে তথ্য নেয়ার জন্য নানা ধরনের উপকরন থাকলেও বাংলাদেশের ষ্টলে তেমন কিছুই নেই। এমনকি দুজন মেয়েকে ষ্ট্যান্ডে দাড় করিয়ে রাখা হয়েছে তাদেও কাছেও কোন তথ্য নেই। এই দুজন মেয়ে এমনভাবে হিজাব পড়ে দাড়িয়ে ছিলেন যে বাইরের দেশের দর্শনার্থী মনে করবে এইটা মিডলইষ্টের কোন দেশ! 

ওয়াল্ড ট্রাভেল মার্টে বাংলাদেশের নামে মাত্র অংশগ্রহন থাকলেও পর্যটন নির্ভর দেশগুলো সফল ভাবে তাদের দেশকে তুলে ধরেছেন। যে সকল দেশের প্রচার কিংবা প্রসারের প্রয়োজন নেই তারাও বিশাল আয়োজনে অংশ নিয়েছেন এবারের বিশ্ব পর্যটন মেলায়। তারা মনে করেন এটি এখন পরিস্কার ভাবে প্রমাণিত বর্তমান বিশ্বে পর্যটনের সম্ভাবনা অসীম।  


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর