২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১০:৫৫

স্পেনে বাংলাদেশ দূতাবাসের একুশের অনুষ্ঠানে নেই আওয়ামী লীগ

স্পেন প্রতিনিধি:

স্পেনে বাংলাদেশ দূতাবাসের একুশের অনুষ্ঠানে নেই আওয়ামী লীগ

স্পেনে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ। দূতাবাসের অনুষ্ঠানে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন না করা এবং স্পেনে সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে অনুষ্ঠিত সভাগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের পাশে দূতাবাস কর্মকর্তাদের নিয়মিত অংশগ্রহণের অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি বলে দলের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন। তবে বাংলাদেশ দূতাবাস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জানা যায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাদ্রিদে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে দূতাবাস হলরুমে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অ্যসোসিয়েশনসহ স্থানীয় কয়েকটি আঞ্চলিক সংগঠনের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু উপস্থিত ছিলেন না আওয়ামী লীগ স্পেন শাখার কোন শীর্ষ নেতা।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে জাতীয় দিবস উদযাপনের কোন অনুষ্ঠানে এবারই প্রথম স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেল। তিনটি গ্রুপে বিভক্ত স্পেন আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছ থেকে অবশ্য এ ইস্যুতে একই বক্তব্য পাওয়া গেছে। স্পেন আওয়ামী লীগের পান্না-নয়ন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নয়ন বলেন, দূতাবাসকে বুঝতে হবে আওয়ামী লীগ বর্তমানে বাংলাদেশের রুলিং পার্টি। তাই আওয়ামী লীগকে তাদের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। দলের নেতাকর্মীরা দূতাবাসের অনুষ্ঠানে প্রাপ্য সম্মান পান না বলে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ।
স্পেন আওয়ামী লীগের আতা-রিজভী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক রিজভী আলম বলেন, সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে অনুষ্ঠিত সভাগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত হোন, একই টেবিলে বসেন, সেটা ব্যক্তিগতভাবে আমি মেনে নিতে পারি না। আওয়ামী লীগের কোন অনুষ্ঠানমালায় উনারা আসেন না। দূতাবাস একটা ধোঁয়া তুলছে যে আওয়ামী লীগে গ্রুপিং। আমাদের মধ্যে গ্রুপিং থাকুক, সেটা আমাদের বিষয়। সেটাতো দূতাবাসের বিষয় না। আমাদের দল আওয়ামী লীগকে উনারা ছোট করছেন। যেখানে আমাদের দলকে ছোট করা হবে, সেখানেতো আমরা থাকতে পারি না।

স্পেন আওয়ামী লীগের রবিন-রহমান গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুষ্ঠানগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ণ করা হয় না। অনুষ্ঠানে প্রথম বা দ্বিতীয় সারিতে কেবল বসে থাকতে হয় এবং অনুষ্ঠান শেষে তারা যে খাবারের ব্যবস্থা করেন, সেটা নিয়ে চলে আসতে হয়। এরকমতো হতে পারে না। এমন হলে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাতো যাবেন না।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে দূতাবাসের দূতালয় প্রধান এম হারুণ আল রাশিদ স্পেন আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের দরজা সকল বাংলাদেশির জন্য উন্মুক্ত এবং অনুষ্ঠানগুলোতেও সবাইকে আমন্ত্রণ ও  যথাযথ সম্মান দেয়া হয়। স্পেনে সামাজিক সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠানগুলোতে বিএনপি জামায়াত নেতাদের সাথে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দূতাবাসের কর্মকাণ্ড  মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হচ্ছে। স্পেনে যেসব সামাজিক সংগঠনের অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকেন, সেখানে আওয়ামী লীগসহ সব দলেরই নেতা কর্মীরা থাকেন। কিন্তু সেইসব সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্বে যারা থাকেন, তাদের সকলের পরিচয় সঙ্গত কারণেই জানা সম্ভব হয় না। আর দূতাবাস থেকে এসব সামাজিক সংগঠনের অনুষ্ঠানমালায় উপস্থিতির প্রধানতম কারণ হচ্ছে দূতাবাসের সেবা সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে অবহিত করা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের স্পেন শাখার একজন নেতা বলেন, আমাদের নিজেদের গ্রুপিংয়ের কারণেই দূতাবাসে আমাদের নেতাদের দলীয় পরিচয় কিংবা বক্তব্যের সুযোগ দেয়া হয় না।

প্রসঙ্গত, স্পেন আওয়ামী লীগের গ্রুপিং নিয়ে গত বছরের ২৫ অক্টোবর ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এর ইউরোপ সংস্করণে ‘প্রত্যেক নেতারই আলাদা কমিটি’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর