এখন থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে ইস্ট হ্যামের এক বাংলাদেশি ব্যক্তি তার নিজে বাসার সামনে ছুরিকাঘাতে হত্যার শিকার হন। কিন্তু দীর্ঘ দিনে এখনো ভুক্তভোগী পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের বিচার পায়নি।
ইস্ট হ্যামের বার্নলেস এভিনিউয়ের বাসিন্দা আতিক হুসাইন ১৯৯৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে বাসায় ফিরছিলেন। ক্রয়ডনে আতিক হুসাইনের একটি রেস্টুরেন্ট ছিল। রেস্টুরেন্ট থেকেই তিনি বাসায় ফিরছিলেন। রাত তখন ২টা ৩৫ মিনিট। হঠাৎ হুসাইনের আর্তচিৎকারে তার মেয়ে ইয়াসমিনের ঘুম ভেঙে যায়।
১০ বছর বয়সী ইয়াসমিন দরজা খুলেই দেখতে পায় তার বাবা ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। কীভাবে এমন অবস্থা হলো জিজ্ঞেস করলে তখন হুসাইন মেয়েকে জানান, দুইজন এশিয়ান তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়েছে। ছুরিকাহত হওয়ার পরে হুসাইন একটি টেলিফোন লাইন থেকে পুলিশকে ফোন করেন। এরপর কোনোক্রমে বাসার দরজায় আসেন। এর কিছুক্ষণ পরে পুলিশ ও প্যারামেডিকরা আসলেও হুসাইন বাঁচতে পারেননি। অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা যান।
হুসাইন তার ১০ বছর বয়সী কন্যা ইয়াসমিনের কোলে মাথা রেখেই মারা যান। এদিকে এমন নৃসংশ হত্যাকাণ্ডের ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
হুসাইনের মেয়ে বর্তমানে ৪০ বছর বয়সী ইয়াসমিন বলেন, আমার বাবা আমাদের কমিউনিটিতে অন্যরকম একজন মানুষ ছিলেন। তিনি এলাকার ছেলেমেয়েদের নিজে থেকে খাবার অফার করতেন, মানুষের দুঃখে পাশে থাকতেন। তার এভাবে মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। বাবার মৃত্যুর সময় আমার সাত মাস এবং সাত বছর বয়সী দুটি ভাই-বোন ছিল। আমার মা আর বিয়েও করেননি। এখনো তিনি আমার বাবার স্মৃতির কথা বলে কাঁদেন। আমার মা এক ধরনের মানসিক ট্রমায় ভুগছেন।
তিনি আরও বলেন, এখনো অনেক মানুষ আমাকে আমার বাবার এভাবে মৃত্যু নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। আগের বছরে পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ইনফরমেশনের আবেদন জানালেও এই বছর সেটাও করা হয়নি। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই ব্যাপারে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ