২৮ আগস্ট, ২০১৬ ১১:৪৭

'কয়লাপ'

মাহমুদা আকন্দ:

'কয়লাপ'

ছবি: প্রতীকী

এক দেশে ছিল এক রাণী আর তার ছিল চন্দনবর্ণা এক মেয়ে। চন্দনের মত গায়ের রং ছিল বলে রাণী তার মেয়ের নাম রেখেছিলেন চন্দনকুমারী। কিন্তু সেই দেশে ছিল নানারকম পরিবেশ দূষণ; সবচেয়ে বেশী ছিল বায়ু দূষণ। এ কারণে চন্দনকুমারীর ত্বকে কিছু সমস্যা দেখা দিল। রানী রাজকবিরাজকে ডেকে বললেন সমস্যার প্রতিকার দিতে। রাজকবিরাজ বললেন, "চিন্তা কেন, রাণী? রাজকুমারীর নামেই রয়েছে সমস্যার প্রতিকার।"

রাণী আকুল হয়ে বলেন, " ভণিতা কেন আর, বল কী সেই প্রতিকার? "
অতঃপর, চন্দনকুমারীর অঙ্গে চন্দনচূর্ণ মাখিবার আজ্ঞা করেন রাজকবিরাজ। দিন যায়, মাস যায় চন্দনকুমারীর ত্বক আর আগের মত উজ্জ্বল হয়ে ওঠে না। রুষ্ট হন রাণী, পাঠান সিপাহশালায়, বন্দী হন রাজকবিরাজ। হবে কী উপায়, কবিরাজের প্রাণ বুঝি যায়!!
সহসা উপায় আসে মনে, বিষে বিষক্ষয় তা কে না জানে?? যে দূষণে রোগ, সে দূষণেই প্রতিরোধ!! 
কবিরাজ বলে ওঠেন," রানী, করেছি আপনার সেবা, আপনার চেয়ে আপন কে বা? মিনতি করি তাই, আরেকবার সুযোগ যেন পাই।"
কবিরাজের তরে, কিঞ্চিৎ করুণা জাগে রাণীর অন্তরে। রাণী বলেন, " বল কি আছে বলার, নাই ধৈর্য্য কালক্ষেপণ করবার। মনে রেখো কবিরাজ, শেষ সুযোগ তোমার।"
কবিরাজ বলেন," চন্দন নহে আর, কয়লায় হবে প্রতিকার।"
রাণী ভ্রুকুটি করে বলেন, " মাথা ঠিক আছে কি তোমার?"
কবিরাজ বহু চেষ্টায় রাণীকে সম্মত করে। সকাল বিকাল কয়লাচূর্ণ মাখানো হয় চন্দনকুমারীকে। অবশেষে বাস্তবেই হয় রোগের প্রতিকার। কয়লার ওষধি গুণে মুগ্ধ হয়ে রাণী কবিরাজকে "উন্নয়নরাজ" উপাধি প্রদান করেন এবং বহুমূল্য পুরুষ্কারে ভূষিত করেন। সেই সাথে চন্দনকুমারীর নাম বদল করে রাখেন "কয়লাকুমারী"।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : 'কয়লাপ' একটি কাল্পনিক উপাখ্যান। এর সাথে বাস্তবিক বিষয়ের কোনো মিল কেউ খুঁজে পেলে লেখক কোনোভাবেই দায়ী নন।

লেখক: সহকারি অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

 

বিডি প্রতিদিন/২৮ আগস্ট ২০১৬/হিমেল-১১

সর্বশেষ খবর