১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৭:৪৬

ঘুরে এলাম খৈয়াছড়া

নূর হোসেন নয়ন

ঘুরে এলাম খৈয়াছড়া

ছবি: নূর হোসেন নয়ন

পাহাড়ী দুর্গম পথে ঘণ্টাখানেকের খাড়া চড়াই পার হওয়া; গহীন বনে পাহাড়ী ছড়ার খলখল ধ্বনিতে নিজেকে হারিয়ে ফেলা; প্রায় ৭০ ফুট উপর থেকে হিমশীতল পাহাড়ী ঝর্ণার পানি পড়ছে গা বেয়ে– এসব অনূভুতি পেতে চান? তাহলে সময় নিয়ে ঘুরে আসুন খৈয়াছড়া থেকে। 

খৈয়াছড়া, বাংলাদেশের অপূর্ব সুন্দর এবং রোমাঞ্চকর দুর্গম এক দর্শনীয় স্থান। চট্টগ্রামের মিরসরাই থানার ভেতরেই অবস্থিত এ  মনোরম প্রাকৃতিক স্থানটি। ঈদের ছুটিতে বন্ধুদের নিয়ে এক ফাঁকে ঘুরে এলাম সেখান থেকে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বড় পাহাড় , পাহাড়ি ছড়া, মহামায়া বাঁধ ছাড়াও প্রাকৃতিক সব অবারিত সৌন্দর্য ছাড়াও এই জায়গার বিশেষ আকর্ষণ খৈয়াছড়ার ৭টি বিশাল ঝর্ণা। প্রতি মুহূর্তে পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া পানির সৌন্দর্য কতটা মনোমুগ্ধকর হতে পারে তা খৈয়াছড়া গেলেই খুব ভালভাবে অনুভব করা যাবে। মূল ঝর্ণার যাওয়ার পথ শ্রমসাধ্য। পাহাড়ী পথে আরোহণের আগেই সবার দেখাদেখি আমরাও কাপড় পালটে শর্টস আর থ্রি কোয়ার্টার পরে নিলাম। আর সাথে নিলাম দুটি করে মুলিবাস। বাঁশ যে কতটা উপকারী হতে পারে তা এই পথে না আসলে বুঝতে পারতাম না। ওঠা শুরু করার পর  কখনো ৭০ ডিগ্রি খাড়া পথে উড্ডয়ন, কখনোবা আবার পিচ্ছিল পথে নামা, আবার ছড়ার পথে পানিতে ভিজতে ভিজতে প্রায় দেড়ঘণ্টা এক দানবীয় পরিশ্রমের পর পাহাড়ের ভেতর থেকে ঝারণিক শব্দ আর কাব্যিক রূপ নিয়ে দেখা দিল খৈয়াছড়া ঝর্ণা। স্থানীয়দের তরফে জানতে পারলাম খৈয়াছড়ায় বড় ঝর্ণা মোট ৮টি । প্রথম দুটি ঝর্ণার কাছে যাওয়া সহজ হলেও বাকিগুলোর দেখা পাওয়া কষ্টসাধ্য।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের যেকোন বসে চড়ে  মিরসরাইয়ের কাছে খৈয়াছড়া নামলেই হবে। সেখান থেকে বন বিভাগের সাইনবোর্ড চোখে পড়বে। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের থেকে নেমে পাকা রাস্তা ধরে ১০ মিনিট আর ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন পেরিয়ে  কাঁচা রাস্তায় আরও ১৫ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন পাহাড়ের পাদদেশে। ট্রেনে গেলে লোকাল বা মেইলে করে নামতে হবে বড়তাকিয়া স্টেশনে। সেখান থেকে অল্প টাকায় সিএনজি অটোরিক্সা ভাড়া করে পাহাড়ের কাছে চলে যাওয়া যায়। ঝর্ণার জন্য যাত্রা শুরু করার সবচেয়ে ভয়াল সময় সকাল ১০টার দিকে। উড্ডয়নে প্রায় দেড়ঘণ্টার মত লাগতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে ঝর্ণার উদ্দেশ্যে আরোহণ শুরু করুন। 

তো, সময় করে ঘুরে আসুন খৈয়াছড়া। আমাদের ভালো লেগেছে; আপনারও ভাল লাগবে নিশ্চয়তা দিচ্ছি। আর হ্যাঁ, সাথে করে বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার এবং প্লাস্টিক ব্যাগ এবং এই ভ্রমণের সবচাইতে উপকারী বন্ধু বাঁশ সাথে নিতে ভুলবেন না যেন। 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ

সর্বশেষ খবর