গেইমস অর্থাৎ খেলা বা ক্রিড়া যাই বলি না কেন আমরা খেলি কেন? কারো কাছে হয়তো খেলাধুলাটাই পেশা, কারো কাছে আবার নেশা, কিংবা নেশা-পেশা উভয়ই হতে পারে। তাছাড়া শুধুমাত্র নির্মল বিনোদন লাভের জন্য খেলাধুলা করে অনেকে। আবার এমন অনেক ব্যক্তি আছে যারা শারীরিক বা মানসিকভাবে ফিট থাকার জন্যও খেলে। তবে এই খেলা বা গেইমস বলতে কিন্তু আমি ভার্চুয়াল গেইমস বা ভিডিও গেইমকে বুঝাইনি। ভার্চুয়াল বা ইন্টারনেট ভিত্তিক খেলাধু্লা আমাদের বিনোদন দিলেও শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য কুঁড়ে কুঁড়ে নষ্ট করছে।
অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক বার্তা হচ্ছে, বর্তমান প্রজন্ম খেলার আবারিত মাঠ ছেড়ে কম্পিউটারের মাউস আর স্মার্ট ফোনের পর্দায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেরেই চলছে!
ফলে আমাদের তরুণ-তরুণীরা হয়ে পড়ছে সংকীর্ণমনা ও যন্ত্রনির্ভর।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর নেতিবাচক ব্যবহার ধ্বংস করছে আমাদের প্রজন্মের ভবিষ্যত। বর্তমান সময়ে ভার্চুয়াল জগতের সর্বাধিক আলোচিত বিষয় হলো ব্লু হোয়েল গেইম। গত বৃহস্পতিবার রাতে সেন্ট্রাল রোডের বাসায় নিজের পড়ার কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় অপূর্বা বর্মণ স্বর্ণা (১৩) নামক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করার পর সকলের টনক নড়ে। জানা যায়, ফার্মগেটের হলিক্রস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী অপূর্বা ইন্টারনেটভিত্তিক ডেথ গেমস ব্লু হোয়েলের মারাত্মক ফাঁদে জড়িয়ে আত্নহত্যা করে। আমরা ইতোপূর্বে অতিমাত্রায় ইন্টারনেট আসক্তির বিভিন্ন কু-ফল দেখলেও একটা গেইমস যে মৃত্যুর কারণ হতে পারে তা ছিল অকল্পনীয়।
২০১৩ সালে রাশিয়ার ২২ বছর বয়সী সাইকোলজির স্টুডেন্ট ফিলিপ বুদেকিন হলো এই গেমের স্রষ্টা। ৫০ ধাপের এই গেইমসে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার মাধ্যমে আকৃষ্ট করে তরুণদের। যার শেষ পরিণাম আত্মহনন!তাই প্রাণঘাতি এই গেইমস প্রকট আকার ধারন করার আগেই আমাদের সচেতন হতে হবে। সেজন্য পরিবারে আনন্দঘন ও প্রাণবন্ত পরিবেশ থাকা দরকার।
ধর্মীয় অনুশাসন পালনের সাথে সাথে সচেতন থাকতে হবে অভিভাবকদের এবং সরকারকে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়াকে আরো সক্রিয় হতে হবে। আমরা যার যার জায়গা থেকে আত্মঘাতি এই গেইমস থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে সোচ্চার হবো।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা কমার্স কলেজ।
বিডি প্রতিদিন/১০ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল