১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ২১:১৬

স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার এবং অর্থনৈতিক মুক্তি

সাবরিনা শুভ্রা

স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার এবং অর্থনৈতিক মুক্তি

প্রতীকী ছবি

১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। গৌরবদীপ্ত ও দুর্বিনীত সাহসী জাতি হিসেবে আমাদের কাছে দিনটি অনন্য সাধারণ ও স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। এ দিনটি শুধু পঞ্জিকার পাতায় কোনো জ্বলজ্বলে লাল তারিখ নয়, নয় কেবল চৈত্রের দগদগে রৌদ্রময় একটি দিন, বাংলাদেশী জাতির কিংবদন্তীতুল্য দেশপ্রেম, অবিরাম সংগ্রাম এবং সংহত শক্তিরও প্রতীক।

বাংলাদেশের মানুষের জাতিসত্তার বিকাশ ঘটেছে হাজার বছরের বেশি সময় ধরে। প্রকৃতি, পরিবেশ, জীবনাচরণ, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-আশাক সব মিলিয়েই তাদের মধ্যে জাতীয় সাজুয্য গড়ে ওঠে। তাদের আশা-আকাক্সক্ষাও হয়ে ওঠে অভিন্ন। ফলে তারা এই অঞ্চলের অন্যান্য জনগোষ্ঠী থেকে স্বতন্ত্র হয়ে ওঠেন। তাদের আশা-আকাক্সক্ষা আর চেতনাও হতে থাকে ভিন্ন। তাদের এই স্বতন্ত্র জীবনবোধের ওপর যখনই আঘাত এসেছে, তখনই ঐক্যবদ্ধভাবে তা রুখে দিয়েছেন।

আমাদের স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল প্রধানত আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার এবং অর্থনৈতিক মুক্তি। আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের সঙ্গে গণতন্ত্রের যোগাযোগ ওতপ্রোত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ছিল গণতন্ত্রের আকাক্সক্ষা। তা ছাড়া এ পর্যন্ত প্রায় সকল পণ্ডিতই একই রকম অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, গণতন্ত্র ছাড়া অর্থনৈতিক অগ্রগতি অসম্ভব ব্যাপার। এ দেশের মানুষ অনেক আত্মদান, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা তো অর্জন করল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। পতাকা বদল হলো। নতুন দেশ হলো। আনন্দে উদ্বেলিত হলো এ দেশের মানুষ। এদের সহস্র বছরের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে।

ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, দিনটি আবেগমথিত, মহিমান্বিত ও স্বাতন্ত্র্যে ভাস্বর। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক ক্ষণ এটি। টানা নয় মাসের মরণপণ লড়াই ও সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের পর সাড়ে সাত কোটি মানুষ পেয়েছিলো নিজস্ব মানচিত্র, নিজের মতো করে একটি লাল-সবুজ পতাকা। অযুত জনতার আপসহীন মনোভাব ও বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বতন্ত্র স্বাধীন জাতিসত্তায় বিশ্ববুকে অধিষ্ঠিত।

লেখক: গবেষক, কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।
[email protected]

সর্বশেষ খবর