২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ২৩:৫২

রোহিঙ্গাদের হত্যা ও ধর্ষণে সেনাবাহিনীর পোশাকে মগরাও!

অনলাইন ডেস্ক

রোহিঙ্গাদের হত্যা ও ধর্ষণে সেনাবাহিনীর পোশাকে মগরাও!

সংগৃহীত ছবি

মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে নিরীহ রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর চলছে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন, নির্যাতন, হত্যাযজ্ঞ ও নৃশংসতা। পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের বসত ভিটা। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন অনেক রোহিঙ্গা যুবতী ও কিশোরী মা-বোন।  কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তাদের সর্বস্ব।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা একে জাতিগত নিধন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। আর এ নির্যাতনের সেনাবাহিনীর পাশাপাশি অংশ নিচ্ছে স্থানীয় মগরা। এমনকি তারা নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক পরিধান করে নিরীহ রোহিঙ্গাদের হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে এমনটাই দাবি করেছন বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।

উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে স্ত্রী আর এক সন্তানকে নিয়ে বেঁচে এসেছেন মোহাম্মদ নূর। তার চোখের সামনেই হত্যা করা হয়েছে তার বড় ভাই ও বাবাকে। গত ২৪ আগস্ট শুরু হওয়া সহিংসতায় হারিয়েছেন সর্বস্বও।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর পাশাপাশি গ্রামের স্থানীয় মগরাও মানুষের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন। বেশিরভাগ মগই এ সময় সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত ছিলেন’।

বুচিডং এলাকার মগদের হাতেও সেনাবাহিনী অস্ত্র ও পোশাক দিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন একই ক্যাম্পের শরণার্থী মোহাম্মদ রফিক।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী যখন গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে আগুন দিচ্ছিলো, তখন আমরা প্রতিরোধে লাঠি-সোটা নিয়ে বের হয়ে এসেছিলাম। কিন্তু দূর থেকে দেখলাম, এলাকার মগদের মধ্যে যারা বখাটে হিসেবে পরিচিত, তাদের প্রত্যেকে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা, হাতে অস্ত্র। গুলি করতে করতে এগোচ্ছেন তারা’। ‘আমাদের সামনে যারা ছিলেন, তারা সবাই গুলি খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আমরা তখন পিছু হটি। পরিবার-পরিজন নিয়ে পালিয়ে আসি। এছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না’।

সেনাবাহিনীর পোশাক পরা মগরা বুচিডং এলাকার অন্তত ১০০ রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ শেষে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেন বলেও অভিযোগ শরণার্থীদের।

রাইখ্যং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা রাইম্মা বিলের ১২ বছরের সখিনা জানায়, সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত দু’জন যুবক ধর্ষণ করেন তাকে। তবে একাধিকবার ওই যুবকদের গ্রামের বাজারে দেখেছে সে। তাদেরকে সাধারণ মগ হিসেবেই জানতো। কিন্তু ধর্ষণের সময় তাদের পরনে ছিল সেনাবাহিনীর পোশাক।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে সোয়া চার লাখ রোহিঙ্গা।

বিডিপ্রতিদিন/ ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/ ইমরান জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর