সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

বৃষ্টির সঙ্গে দেখা

শরীফ বিল্লাহ

বৃষ্টির সঙ্গে দেখা

নতুন বিয়ে করেছি তো বউ একটু বেশিই লাইক করে। লাইকের চোটে একটু বেশি ঝামেলার মধ্যে আছি। আমি আবার বেকার মানুষ তো তাই একটু বেশিই ব্যস্ত থাকি। সেদিন কী একটা মহা ব্যস্ততার কথা বলে বাসা থেকে চামে বের হয়ে যাই। বাসায় ঘ্যানর-ঘ্যানর প্যানর-প্যানর করলেও বউ আবার বাইরে বের হলে মহা চাপে রাখে। টাচওয়ালা দামি মোবাইল দিয়ে নন-স্টপ আধা ঘণ্টা অন্তর অন্তর কল করতে থাকে। ইদানীং কল এলেই আমি ভয় পাই। ঘর থেকে যেই না বের হয়েছি অমনি বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি। বৃষ্টির ঠেলায় রাস্তা পানিতে টইটম্বুর। লাফ দিয়ে কোনোমতে আট নম্বর লোকাল বাসে উঠি। যেই না ২ টাকার জন্য কন্ডাক্টরের সঙ্গে উঁচু গলা নিয়ে মারামারি বাধিয়ে ফেলছিলাম অমনি বউয়ের কল। ফোন বের করতেই দেখি বউয়ের কল। কল দেখেই আমার উঁচু গলা নিচু হয়ে গেল। কল রিসিভ করতেই বউ বলল, এই তুমি কোথায়? সোজা বাসায় চলে এসো। আমি নড়েচড়ে বললাম, ওগো বাইরে যে বৃষ্টি। আসব কী করে। সটাং করে বউ ফোন রেখে দিল। আমি হালকা ভয় পেলাম। গুলিস্তান নেমে বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য একটা চিপা মার্কেটে ঢুকলাম। ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আবার কল। রিসিভ করতেই বউয়ের বাজপড়া কর্কশ শব্দ, এই তুমি কোথায়? গলাকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে বললাম, আমি তো গুলিস্তান। কি তোমার জন্য কসমেটিক লাগবে? এবার পল্টনের জনসভার ভাষণের মতো চিৎকার করে বলল, বাসায় আসছ না কেন? আমি মিউ মিউ করতে করতে বললাম, আসব কী করে, এখনো বৃষ্টি আছে। বৃষ্টির কথা শোনাতেই বউ ভাঙা ক্যাসেটের মতো চিৎকার, 'আজ তোমার খবর আছে। তাড়াতাড়ি বাসায় আস।' খবরের কথা শুনে ভাবলাম আমি যে বৃষ্টিতে আটকা পড়েছি মনে হয় তা কোনো চ্যানেলে লাইভ দেখাচ্ছে। লাইভের কথা মনে হওয়ায় খুশিতে আমি গদগদ করতে করতে বাসার দিকে দৌড় দিলাম। বাসার সামনে আসামাত্র দেখি দরজা বন্ধ। যেই না সজোরে দরজা ধাক্কা দিচ্ছিলাম বউয়ের টুঁ শব্দটিও নেই। বুঝলাম বউ রেগে আছে। কোমল স্বরে বললাম, ওগো দরজাটা খুলবা? তোমাকে যা সুন্দর লাগবে না। দরজার ফুটো দিয়ে আমাকে দেখে বউ বলল, তোমার বাসায় আসার দরকার নেই। তোমার প্রিয়তমা বৃষ্টিকে নিয়েই থাক। আমি আমার বাপের বাড়ি চললাম।

 

সর্বশেষ খবর