ভেবে দেখলাম মশা আসলে প্রাণী হিসেবে খুব একটা খারাপ না। আমরা ভাত খাই, ওরা রক্ত খায়- এই যা পার্থক্য। এরা একটা সংগীতপ্রিয় জাতি। বেশ তাল-লয় জ্ঞান আছে। ফ্রিতে গান শোনায়। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, একটা সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করব। প্রথমে ভাবলাম মুখেই বলি। তবে চুপিচুপি বলতে হবে। মাছিরা শুনে ফেলতে পারে। তাই বললাম তাদের কান আমার মুখের কাছে আনতে। কী বুঝল কে জানে! সবগুলো আমারই কানে, নাকে ঢুকে গেল। প্রকাণ্ড এক হাঁচি দিলাম। ওরা ভয় পেয়ে একটু দূরে সরে গেল। যাই হোক বসে থাকলে তো হবে না। তাই নতুন পথ ধরলাম। একটা কাগজে লিখে ফেললাম। বাংলায় লিখলাম। তারপর মনে হলো ইংরেজি যেহেতু আন্তর্জাতিক ভাষা, সেটাও ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ্য হিব্রু ব্যবহারের খুব ইচ্ছা ছিল। ভাষার মৃত্যু হতে পারে তবে মশা তো অমর। হয়তো ওরা সেই প্রাচীনকাল থেকে হিব্রু ভাষাটাই শিখে আসছে। লেখায় কাজ হলো না। লেখার ওপর দিয়ে দুটো চক্কর মেরে ওরা আবারও আমার কাছে ফিরে এলো। ভেবে পেলাম না কীভাবে তাদের জানানো যায়। হঠাৎ একটা বুদ্ধি পেলাম। গানে গানেই হোক না পরিচয়। তারপর একটা খাসা গান ধরলাম। কী হলো কে জানে! মশাগুলো ১০ সেকেন্ডের জন্য চুপ হয়ে গেল। তারপর কেউ কেউ সোজা ভ‚-শয্যায়। বাকিরা পড়ি কী মরি করে ছুটল। তারপর থেকে তারা আর কাছে আসে না। আমাকে দেখলে দূর থেকে পালায়। সে তাদের ইচ্ছা। আফসোস এটাই, সাধের সংগীত সন্ধ্যার আয়োজনটা ভেস্তে গেল।
-শেখ আবিদ হোসেন, বাগমারা, খুলনা।