১। রাস্তার দুইটা ভাগ। একভাগ দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে একভাগ দিয়ে আসছে। জ্যাম লাগবে ঠিক ওই পাশে যে পাশে আপনি আছেন। আপনি জ্যামে বসে থাকবেন আর দেখবেন অন্য পাশ দিয়ে রিকশা, গাড়ি আপনাকে অতিক্রম করে যাচ্ছে।
২। ধরুন, আপনি ৩০ মিনিট জ্যামে বসে হাঁপাচ্ছেন। বিরক্তির চরম পর্যায়ে পৌঁছে সিদ্ধান্ত নিলেন রিকশা থেকে নেমে যাবেন এবং বাকি দূরত্বটা হেঁটেই পার
হবেন। আপনি রিকশাচালককে ভাড়া দিয়ে হাঁটা শুরু করলেন। কয়েক কদম আগানোর পরেই দেখবেন জ্যামটা ছেড়ে দিয়েছে।
৩। আপনার অফিসের তাড়া। আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন আজ মূল রাস্তা দিয়ে না গিয়ে একটা গলি দিয়ে যাবেন। এতে রিকশা ভাড়া একটু বেশি লাগলেও জ্যাম এড়ানো যাবে। কারণ ওই গলিতে কখনোই জ্যাম লাগে না। রিকশাওয়ালাকে বললেন, ‘মামা আজকে গলি দিয়ে যান, ভাড়া বাড়িয়ে দিব।’ রিকশা গলির মোড়ে যাওয়া মাত্র দেখবেন যে
গলিতে জীবনেও জ্যাম লাগে না আজকে ওই গলিতে গুলিস্তান মোড়ের চেয়ে বেশি
জ্যাম।
৪। এফএম রেডিওতে শুনলেন এই মুহূর্তে ফার্মগেট এলাকায় একদমই জ্যাম নেই। খুশিতে লাফ মেরে রিকশায় উঠলেন। তাড়াতাড়ি চালাতে বললেন রিকশার মামাকে। ফার্মগেট এলাকায় পৌঁছলেন। গিয়ে দেখবেন সারাদিন ফাঁকাই ছিল কিন্তু মাত্র দুই মিনিট আগে কঠিন জ্যাম লেগে গেছে।
৫। যখন জ্যামে থাকবেন না তখন দেখবেন রাস্তার অপর পাশ দিয়ে রিকশা করে সুন্দরীরা আসছে। আপনাকে সাঁই সাঁই করে ক্রস করে চলে যাচ্ছে। যখন জ্যামে বসে বিরক্ত হবেন তখন জীবনেও রাস্তার অপর পাশে কোনো রিকশায় কোনো সুন্দরীর দেখা পাবেন না।
৬। জ্যামে আটকা থাকা অবস্থায় আপনার সামনের রিকশার দিকে তাকান। দেখবেন সেটার
পাশেই একটা দালান আছে। সেটা ওই রিকশার যাত্রীকে রোদ থেকে রক্ষা করছে। আপনার পেছনের রিকশার দিকে তাকান, দেখবেন ওই রিকশার পাশে একটা বৈদ্যুতিক খুঁটি আছে। সেই খুঁটি রিকশার যাত্রীকে রোদ থেকে রক্ষা করছে। আপনার রিকশার পাশে তাকান, দেখবেন কিছুই নাই। রোদ এসে পড়ছে সোজা আপনার মাথার উপর।
৭। জীবনে যতবার রিকশায় উঠার পর বৃষ্টি এসেছে আপনি হুড টানিয়েই কাজ চালিয়ে দিয়েছেন। রিকশাচালক বলার পরেও কখনো পলিথিন দিয়ে শরীর ঢাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। পলিথিন আপনার ভালো লাগে না। রিকশাচালককে বলেছেন, ‘না মামা।
পলিথিন লাগবে না। একটু ভিজলে কিচ্ছু হবে না।’
ধরুন, ফার্মগেটে কঠিন জ্যামে পড়েছেন। হঠাৎ এলো বৃষ্টি। জীবনে এই প্রথম আপনি পলিথিন দিয়ে শরীর ঢাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। রিকশাচালককে বললেন, ‘মামা পলিথিন দেন।’
রিকশাচালক আপনাকে হেসে বলবে, ‘মামা, আজকে তো পলিথিন আনি নাই।’
৮। আপনার পাশের রিকশার দিকে তাকান। রিকশাচালক শান্তিমতো জ্যামে বসে আছে। ১০ ফুট সামনের রিকশার দিকে তাকান। সেটার চালকও শান্তিমতো বসে আছে। ২০ ফুট সামনের চালকের দিকে তাকান। দেখবেন চালক শান্তিমতো বসে আছে। ১০ ফুট
পেছনের রিকশার দিকে তাকান। সেটার চালকও দেখবেন শান্তিপ্রিয় মানুষ। আপনার নিজের রিকশার চালকের দিকে তাকান, আর পেছনের রিকশার চালকের দিকে তাকান। দেখবেন দুইজন মারামারিতে লিপ্ত।
: ওই ব্যাটা আমার রিকশায় লাগাইলি ক্যান?
: ধুর ব্যাটা, আমার রিকশায় তুই লাগাইছিস!