সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

অভিভাবক আর সন্তান যদি একে অন্যের ভূমিকা পালন করত!

রাফিউজ্জামান সিফাত

অভিভাবক আর সন্তান যদি একে অন্যের ভূমিকা পালন করত!

সকালের অফিস/স্কুল

সকালে নাশতার টেবিলে অভিভাবকরা অফিসে না যাওয়ার ফন্দি এঁটে বলত, ওহ পেটে ব্যথা, আজ অফিস যাব না। সন্তানরা তখন আদরমাখা গলায় বলত, লক্ষ্মী বাবা, অলসতা কর না, যাও দ্রুত রেডি হয়ে নাও, তোমার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে! আমি স্কুুলে যাওয়ার পথে তোমাকে অফিসে ড্রপ করে দিব।"  

 

অফিস/স্কুল ফেরত

অফিস থেকে ফিরতে দেরি হলে অভিভাবকরা ভয়ে থাকত যদি বকা খায়! তাই তারা নিঃশব্দে লুকিয়ে বাসায় প্রবেশ করত যেন কেউ টের না পায়। ওইদিকে সন্তানরা যখন ইচ্ছে তখন স্কুল-কলেজ থেকে বাসায় ফিরতে পারত। দেরি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তাদের কারও কাছে  কৈফিয়ত দিতে হতো না, উল্টো তারা অভিভাবকদের ফোন দিয়ে খোঁজখবর নিত, হ্যালো বাবা, অফিস থেকে ফিরতে এত দেরি হচ্ছে কেন! নিশ্চয়ই কলিগদের সঙ্গে ফের আড্ডা দেওয়া হচ্ছে? তোমাকে না বলেছি সন্ধ্যার মধ্যে অফিস থেকে বাসায় চলে আসতে!"

 

বিনোদন

অভিভাবকরা সাংসারিক কাজের ফাঁকে সন্তানের অগোচরে নিজেদের বিনোদন খুঁজে নিত। দেখা যেত, মায়েরা রান্নাঘরে চুলায় রান্নার ফাঁকে ফাঁকে টিভিতে বউ-শাশুড়ি সম্পর্কযুক্ত জনপ্রিয় কোনো টিভি সিরিয়াল দেখত। বাবারা বাজারের থলেতে লুকিয়ে কিনে নিয়ে আসত পত্রিকা! কারণ ছেলেমেয়েরা টের পেলেই বলবে, কতবার বলেছি এসব আউট বই (পত্রপত্রিকা) পড়বে না! এক্ষুণি অফিসের ফাইল নিয়ে টেবিলে বস। অপরপক্ষে সন্তানরা যখন খুশি তখন কমিকস, তিন গোয়েন্দা, মাসুদ রানা কিংবা যে কোনো গল্প-উপন্যাসের বই পড়তে পারত, তাদের খেলাধুলায় কোনো বাধা থাকত না, যখন ইচ্ছে সিনেমা থিয়েটারে গিয়ে সিনেমা দেখে আসতে পারত।   

 

প্রমোশন/রেজাল্ট কার্ড

কোনো বছর অভিভাবকরা অফিসে  প্রমোশন কিংবা ইনক্রিমেন্ট না পেলে বাসায় কি জবাব দেবে সেই চিন্তায় খুব অস্থির থাকত। সহকর্মী অফিসের বস সাজিয়ে ফোন দিয়ে তারা বলাত, এ বছর কেউ প্রমোশন পায়নি!  অন্যদিকে ছেলেমেয়েদের  স্কুলের রেজাল্ট কার্ডে নম্বর কম থাকলেও কোনো ভাবনা ছিল না। তারা দিব্যি ফুরফুরে মেজাজে বাসায় এসে চুইংগাম চিবুতে চিবুতে গম্ভীর গলায় অভিভাবকদের এই বছর প্রমোশন না হওয়ার কারণ জানতে চাইত।

সর্বশেষ খবর