ঘরবাড়ি, অফিস-আদালত সবখানে চলছে মশার দৌরাত্ম্য। শেষমেশ মশা নিয়ে লিখতে বসেন হায়দার আলী। প্রবীণ গ্রাম্য ডাক্তার। লেখায় করণীয়, বর্জনীয়, দর্শনীয় কোনো সাইড বাদ রাখতে চান না তিনি। চিকুনগুনিয়া নামটার পরিবর্তন দরকার! রোগটা মোটেও চিকন নয়। রোগ হিসেবে মোটাগুনিয়া। করণীয় সম্পর্কে ভাবতে গেলে মাথা ঘুরে ওঠে। কি করব! বাঘ-সিংহ খাঁচায় ভরতে পারলেও খুদে প্রাণী মশার ভয়ে নিজেদেরই খাঁচায় ঢুকতে হয়। কোথাও স্বচ্ছ পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বৃষ্টি, ফ্রিজ বা এসির পানি জমলে যে ক্ষতি হতে পারে তার চেয়ে পানিটুকু খেয়ে ফেলাই ভালো।
সামান্য লিখতেই কেমন ঝিমঝিম ভাব চলে আসে। একটা মশা তার মাথার ওপর দিয়ে ঘুরঘুর করে। অবাক ব্যাপার হলো মশা পিনপিন বাদ দিয়ে মানুষের মতো কথা বলে ওঠে, কি যে বলেন, আপনাকে গান শোনাতে আসলাম।
: অসহ্য, যা চলে যা।: ইস, গান না শুনিয়ে যাব কেন? এখন বলেন কি গান শুনবেন, ইংলিশ, হিন্দি না বাংলা?
: তোর কি মরার সাধ জাগছে? রেগে যান ডাক্তার হায়দার আলী।
মশাটা আকৃতি বদলে কিছুটা বড় হয়। অনেকটা মাছির মতো। দুটো চোখ। জ্বলজ্বল করে জ্বলে। এত ক্ষিপ্রগতিতে ধেয়ে আসে চিন্তার বাইরে। কপালের ওপর বসেই আবার চোখের সামনে এসে দাঁড়ায়।
ডাক্তার সাহেব কেকিয়ে ওঠেন, এই কামড়াস না। তুই কি ডেঙ্গু মশা নাকি রে?
মশাটা বেশ তাচ্ছিল্য করে বলে, ডেঙ্গু কোনো মশা হলো?
: তাহলে তুই আবার কোন প্রজাতি?
: আমরা হলাম নিউক্লিয়ার মশা। আপডেট ভার্সন।
: মানে! তোদের আবার আপডেট, ভার্সন!
: কি ভাবছেন! আমাদের মারার জন্য কত গবেষণা চলে। আমরা কি বসে বসে ডিমে তা দেব?
হায়দার আলী আর কথা বাড়াতে চান না। অনেক গালগল্প হয়েছে। তিনি ঘুম থেকে উঠেন। আবার লিখতে শুরু করেন। নিউক্লিয়ার মশা, মশার আপডেট ভার্সন...
লেখা : মোহাম্মদ অয়েজুল হক