সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিয়ের বাড়ি খাওয়ার হাঁড়ি

রুহুল আমিন রাকিব

বিয়ের বাড়ি খাওয়ার হাঁড়ি

মফিজ ভাইয়ের এক বন্ধুর বিয়ে আগামী রবিবার। এই চিন্তায় ঘুম হারাম তার। কারণ বন্ধুর বিয়ে বলে কথা! খানাপিনা যেমনই হোক, উপহার অবশ্যই ভালো কিছু দিতে হবে। মফিজ ভাই যে কেমন হাড় কিপটে লোক, এই কথা এলাকার মানুষ কম বেশি সবাই জানে।

বিয়ের কার্ডে চোখ বুলাতে মাথা খারাপ অবস্থা তার। কার্ডের এক কোণায় সুন্দর করে লেখা আছে একজনের বেশি দাওয়াতে উপস্থিত হতে পারবে না বিয়েবাড়িতে। এই লেখা দেখে বেশ চিন্তায় পড়ে গেল মফিজ ভাই। গিফটের টাকা তো দাওয়াত খেয়ে তুলতে হবে। একজনে খেলে কী আর গিফটের টাকা উঠবে? মফিজ ভাই অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলেন, শনিবার থেকে বাসায় খাবার খাওয়া একদম বন্ধ করে দিবেন। যেই ভাবা সেই কাজ। শনিবার থেকে কোনো রকমের খাবার মুখে তোলেননি। অবশেষে এলো রবিবার বিয়ের দাওয়াত। দাওয়াত ছিল দুপুরে তবে মফিজ ভাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকেই উপস্থিত বিয়েবাড়িতে। দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে এলো। খাবার সামনে আসতেই এমনভাবে গপগপ করে খাওয়া শুরু করে দিলেন, আশপাশের মানুষ কে কী বলল এ নিয়ে একটুও ভাবার সময় নেই তার। বাটিভর্তি মাংস সব এক মুহূর্তে খেয়ে সাবাড় করে ফেললেন। দ্বিতীয় ইনিংসের মাংসের জন্য অপেক্ষা করছেন। একজন ওয়েটারকে কাছে ডাকলেন। বললেন, এই যে ভাই, আমার বাটিটা একটু পাল্টিয়ে দেন। ওয়েটার এই শুনে, মেলামাইনের বাটি পালটিয়ে একটি স্টিলের বাটি এনে দিলেন। এটা দেখে মফিজ ভাই  রেগে-মেগে আগুন। তবে সেটা প্রকাশ করলেন না। আবার ওয়েটারকে ডাকলেন। বললেন, এই বাটি নয় ভাইয়া, এইটা পাল্টিয়ে আর একটা এনে দিন। ওয়েটার বলল, ওকে, আনতেছি। এটা বলেই এবার একটা চিনামাটির বাটি এনে দিলেন। এই বাটি দেখে এবার আর রাগ আটকাতে পারলেন না। চিৎকার করে বললেন, এই মিয়া আমি কী আপনাকে এই ফঁকাা বাটির কথা বলছি? আমি আপনাকে বলছি আমার বাটিতে মাংস ভর্তি করে আনেন। এই কথা শুনে ওয়েটার বলল, দুঃখিত! কারণ এই ব্যাচের সবার খাওয়া অনেক আগেই শেষ হয়েছে। আপনি উঠে পড়–ন ময়লা পরিষ্কার করতে হবে। বাইরে এখন অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে। এ কথা শুনে মফিজ ভাই রাগে গদগদ করতে করতে উঠে গেলেন। আর বিড়বিড় করে বললেন, অতি লোভ করতে গিয়ে দই খাওয়া থেকেও বঞ্চিত হলাম।

- সফিপুর, গাজীপুর

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর